ইতিহাসের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট হবেন ট্রাম্প

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। সেইসঙ্গে তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টিও কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। ফলে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণে এই দুই কক্ষেরই পূর্ণ সমর্থন পাবেন তিনি। তাই আগামী কয়েক বছরের মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একজন ক্ষমতাধর ব্যক্তিতে পরিণত হবেন। এটি ডেমোক্র্যাটদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। ট্রাম্পের সরকারে আইন প্রণয়নে তাদের ভূমিকা রাখার সুযোগ কমবে।
২০১৫ সাল থেকে ১০০ আসনের সিনেট রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এই বছরও তারা ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে বেশি আসন ধরে রেখেছেন। সিনেটের ১০০ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠার জন্য ৫১ আসন প্রয়োজন। এই নির্বাচনে আগের সব আসন ধরে রেখেছে রিপাবলিকানরা এবং নতুন করে পেয়েছে ৩৩ আসন।
পরপর ছয় বছর ধরে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভও রিপাবলিকানদের দখলে। হাউসের সদস্য সংখ্যা ৪৩৫। এখানে প্রতিটি অঙ্গরাজ্য থেকে জনসংখ্যার অনুপাতে সদস্য পাঠানো হয়। নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে প্রয়োজন ২১৮ আসন।
গতকাল মঙ্গলবার রিপাবলিকানরা নতুন করে ৩০ আসন তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
হাউস যখন একটি কেন্দ্রীয় আইন পাস করতে যায়, তখন এটি সিনেটে যায়। এরপর চূড়ান্ত সইয়ের জন্য প্রেসিডেন্টের কাছে যায়। কেন্দ্রীয় বিচারক, অন্যান্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনেটে অনুমোদন প্রয়োজন।
সিনেট ও কংগ্রেসে রিপাবলিকানরা কর্তৃত্ব করায় আইন পাসের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বড় ধরনের সমর্থন পেতে পারে। তাঁর পূর্বসূরি ডেমোক্র্যাট বারাক ওবামা সিনেটের সঙ্গে কঠিন সময় পার করেছেন। সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও রিপাবলিকানদের বিরোধিতায় ওবামা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার সংশোধন করতে পারেননি।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প সহজে অস্ত্র ক্রয় নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমন কি তিনি নিজেকে শ্রেষ্ট দ্বিতীয় সংশোধন উকিল বলে আখ্যা দিয়েছেন। তাই বোঝা যাচ্ছে, ডেমোক্র্যাটরা চাইলেও খুব সহজে মরণাস্ত্রের ওপর ২০০৪ সালের নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসছে না।
আমেরিকানদের জন্য চাকরি ফেরানোর লক্ষ্যে ট্রাম্প অভিবাসন আইন আরো কঠোর করার পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন। এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে হাউস অথবা সিনেটে বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হবে না।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটর ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছেন এবং তাঁর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন।
ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কমপক্ষে ১৬ জন রিপাবলিকান ট্রাম্পের ওপর থেকে সমর্থন ফিরিয়ে নেন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সিনেটর জন ম্যাককেইন, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার পল রায়ান।
যাই হোক, গতকালকের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ট্রাম্পকে ফোন করে অভিনন্দন জানান।
যেসব রিপাবলিকান ট্রাম্পের প্রার্থিতার বিরোধিতা করেছের তাঁরা তাঁকে সমর্থন দেন কি না এবং তাঁর পূর্বসূরিদের মতো তাঁকেও মূল বিলগুলো পাস করার সময় কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় কি না আসছে মাসগুলোতে এটিই হবে দেখার বিষয়।