ইতালিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকাডুবি, নিখোঁজ ৩০
ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দুটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ৩০ অভিবাসনপ্রত্যাশী। নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়াদের বরাত দিয়ে আজ রোববার (৫ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। খবর এএফপির।
আইওএম বলছে, ডুবে যাওয়া নৌকার মধ্যে একটি থেকেই নিখোঁজ হয়েছে ২৮ অভিবাসনপ্রত্যাশী। অপর নৌকাটি থেকে নিখোঁজ হয়েছে তিন জন। শনিবার বৈরি আবহাওয়ায় ডুবে যায় নৌকা দুটি।
ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে ডুবে যাওয়া নৌকা দুটি গত বৃহস্পতিবার তিউনিসিয়ার বন্দর শহর স্ফ্যাক্স থেকে ইতালির উদ্দেশে ছেড়ে আসে।
আইওএমের তথ্য কর্মকর্তা ফ্লাভিও ডি গিয়াকোমো এএফপিকে বলেন, ‘বেঁচে যাওয়া লোকদের সঙ্গে কথা বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি অন্তত ৩০ জন নিখোঁজ রয়েছে।’ নৌকাডুবির ঘটনায় সিসিলি আগ্রিজেন্টো শহরের পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। শহরটির পুলিশ প্রধান এমানুয়েলে রিচিফারি বলেন, ‘পাচারকারীরা সমুদ্রের বৈরি আবহাওয়ার বিষয়টি জানত।’ ইতালির গণমাধ্যমকে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এই সময়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের যারা সাগর দিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে বা বাধ্য করেছে, তারা অপরাধী। আগামী কয়েকদিনই সাগর উত্তাল থাকবে। আশা করি, পাচারকারীরা এবার থামবে। এ সময়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সাগরে পাঠানো মানে তাদের মৃত্যুর কোলে পাঠানো।’
এদিকে, ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে বৈরি আবহাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এর জেরে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২০ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধারের জন্য ফায়ার সার্ভিস এবং উদ্ধারকারী দলগুলো প্রস্তুতি নিয়েছে যারা কি না ল্যাম্পেডুসার উপকূলরেখার একটি পাথুরে অংশে আটকে রয়েছে।
প্রতিবেদনে এএফপি জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকে ওই পাথুরে অংশে আটকে রয়েছে ওই অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। তীব্র বাতাসে পাথরে ধাক্কা লেগে তাদের নৌকা ডুবে যায়। আটকেপড়াদের খাদ্য, সুপেয় পানি, বস্ত্র ও শরীর গরম রাখার জন্য কম্বল দিয়েছে রেড ক্রস। তবে, ইতালির কোস্টগার্ড তীব্র ঢেউয়ের কারণে তাদের উদ্ধার করতে পারছে না।
ইউরোপের দেশ ইতালিতে যেতে ভূমধ্যসাগর রুট ব্যবহার করে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। চরম ঝুঁকি জেনেও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এই রুটটি ব্যবহার করেন। আইওএমের তথ্য মতে, চলতি বছরে এই ঝুঁকিপূর্ণ রুটটিতে প্রাণ হারিয়েছে এক হাজার ৮০০’র বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী। যা গত বছর ছিল ৯০০’র ঘরে।
আইওএমের তথ্য কর্মকর্তা ডি গিয়াকোমো বলেন, ‘ভূমধ্যসাগর রুট দিয়ে কতজন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা যাচ্ছে তার সঠিক হিসেব নেই। আমাদের পরিসংখ্যান থেকে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এখনও সমুদ্রে প্রচুর মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে, এমন অনেক নৌকাডুবি হয়েছে যা সম্পর্কে আমরা জানি না।’