রেকর্ড পরিমাণ কমেছে অ্যান্টার্কটিকার বরফ
অ্যান্টার্কটিকা মহাসাগরের বরফে আচ্ছাদিত অঞ্চলের পরিমাণ রেকর্ড নিম্নস্তরে পৌঁছেছে। সাধারণত শীতের সময় এই মহাসাগরের চারপাশে বিরাট পরিমাণের বরফ পরিলক্ষিত হলেও এবার তেমনটি হয়নি। চলতি বছরে সর্বোচ্চ বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল দেখা গেছে গত ১০ সেপ্টম্বর। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্যাটেলাইট ডেটার প্রাথমিক মার্কিন বিশ্লেষণে এমনটি দেখা গেছে। খবর এএফপির।
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ পুরোটাই বরফ ও সমুদ্রে আচ্ছাদিত। রহস্যময়ী অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশকে ঘিরে রেখেছে অ্যান্টার্কটিক মহাসাগর বা সাউদার্ন ওশেন।
যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ন্যাশনাল স্নো এন্ড আইস ডাটা সেন্টার (এনএসআইডিসি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর অ্যান্টার্কটিকা মহাসাগরের বরফ সর্বোচ্চ এক কোটি ৬৯ লাখ ছয় হাজার বর্গ কিলোমিটারে পৌঁছেছিল। সাধারণত শীতের মাসগুলোতে মহাদেশটিতে বরফ বাড়ে। ওই সময়ে বরফের পরিমাণ বৃহৎ আকারে পৌঁছায়। তবে, অক্টোবরে শীত শেষ হলেও ১০ সেপ্টেম্বরেই সর্বোচ্চ বরফ দেখা গেছে।
ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর সরকার সমর্থিত প্রোগ্রাম এনএসআইডিসি জানিয়েছে, ১৯৭৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মহাসাগরে সর্বনিম্ন বরফ রেকর্ড করা হয়। চলতি বছরে যতটুকু বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল দেখা গেছে তা আগের রেকর্ডের চেয়ে ১০ লাখ ৩০ হাজার বর্গ কিলোমিটার কম।
এনএসআইডিসির বিজ্ঞানী ওয়াল্ট মেইয়ের বলেন, ‘অ্যান্টার্কটিকায় রেকর্ড সর্বনিম্ন বরফ দেখা গেছে। সমগ্র মহাদেশের চারপাশে সামুদ্রিক বরফ কম বৃদ্ধি পেয়েছে।’
মার্কিন সংস্থাটির তথ্য মতে, গত ফেব্রুয়ারিতে গ্রীষ্মের সময় অ্যান্টার্কটিকার মহাসাগরের বরফ ১৭ লাখ ৯০ বর্গ কিলোমিটারে পৌঁছেছিল। শীতের দিকে বরফাচ্ছাদিত অঞ্চলের পরিমাণ বাড়ার কথা থাকলেও তা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি।
অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে প্রতি বছর শীতে বরফ জমে। আবার গ্রীষ্মে বরফ গলে যায়। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে আর্কটিক এবং গ্রিনল্যান্ডের বরফ দ্রুত গলে যাচ্ছে। তবে, সর্বেশেষ কয়েক দশকে অ্যান্টার্কটিকায় ব্যাপক হারে বরফ গলে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। এমনকি, কিছু সময় বরফের পরিমাণ বেড়েছিল। কিন্তু, ২০১৬ সালের আগস্ট থেকে বরফ গলার হার যেভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে, তাতে খারাপ কিছু ঘটার উদ্বেগ বাড়ছে।
বরফ গলার কারণ নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। কিছু কিছু বিজ্ঞানী এটিকে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে অনিচ্ছুক। তবে, সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বাড়ার জন্যই এমনটি হচ্ছে বলে ধারণা এনএসআইডিসির।