চীনবিরোধী উইলিয়াম লাই তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
তাইওয়ানের ভোটাররা তাদের ঐতিহাসিক নির্বাচনে সার্বভৌমত্বের পক্ষের প্রার্থী উইলিয়াম লাই চিং-তেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। এর ফলে চীন থেকে দ্বীপটির বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথটি আরও বলিষ্ঠ হলো বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই ফলাফলে উষ্মা প্রকাশ করে চীন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘তাইওয়ান চীনের অংশ।’ খবর বিবিসির।
এক প্রতিক্রিয়ায় শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাকে নাকচ না করে বেইজিং শান্তিপূর্ণ পুনরেকত্রীকরণের ডাক দিয়েছে। তাইওয়ানের এই নির্বাচনকে তারা যুদ্ধ ও শান্তির যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার ধাপ হিসেবেও অভিহিত করেছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে চীন তাইওয়ান দ্বীপের আশপাশে তাদের সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েই চলেছে। আর এতে সম্ভাব্য সংঘাতের বিষয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা।
আট বছর ধরে তাইওয়ানের ক্ষমতায় থাকা স্বাধীনতাকামী উইলিয়াম লাইয়ের নেতৃত্বাধীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) ভূমিকার সমালোচনা করে আসছে চীনের কমিউনিস্ট সরকার। তবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে পরপর তিনবার ক্ষমতায় আসা উইলিয়াম লাই তার করা প্রথম মন্তব্যে বলেছেন, তাইওয়ানের চলার পথ অপরিবর্তনীয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে সারা বিশ্বের গণমাধ্যমের সামনে লাই বলেন, ‘দেশ সঠিক পথে সামনে এগিয়ে যাবে। আমরা পেছনে ফিরব না, পেছনে ফিরে তাকাবও না।’
পরে রাজধানী তাইপের সড়কে সমবেত প্রায় ১০ হাজার সমর্থকের উদ্দেশে লাই তার এই বিজয়কে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করেন। উইলিয়াম লাই চিং-তে বলেন, ‘আমরা করে দেখিয়েছি। আমরা আমাদের নির্বাচনে বাইরের শক্তিকে প্রভাব খাটাতে দেইনি। আমরাই কেবল আমাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারি, এটা আমরা প্রমাণ করেছি।’
তবে চীনের প্রতি একটি বার্তাও দেন লাই চিং-তে। সাংবাদিকদের তিনি জানান, সংঘাত বা বাধাদানের চেয়ে তিনি আরও সংলাপের বিষয়টিকে সমর্থন করেন। তিনি বেইজিংয়ের সঙ্গে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে কাজ করার আশাও ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া চীনের হুমকি থেকে তাইওয়ানকে রক্ষায় তিনি স্বাধীনতাও নয়, আবার পুনরেকত্রীকরণও নয়–এমন নীতি বজায় রেখে একটি স্থিতিশীল অবস্থার কথা তুলে ধরেন।
বেইজিং অবশ্য আগে থেকেই উইলিয়াম লাইকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ ও ‘সমস্যা সৃষ্টিকারী’ হিসেবে তকমা দিয়ে আসছে।
এদিকে, তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র খুব দ্রুতই উইলিয়াম লাইকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এক বার্তায় দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন তাইওয়ানের শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও নির্বাচনি প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি তিনি তাইওয়ানে স্থিতিশীলতা ও শান্তি বজায় রাখতে ওয়াশিংটনের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছেন।