ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি, নিহত ১১২

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে ১১২ জন নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছে। ত্রাণবাহী ট্রাকের বহর থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিতে মরিয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গুলিবর্ষণের এই অমানবিক ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। খবর বিবিসির।
গাজা শহরের দক্ষিণ-পশ্চিমে হতাহাতের এ ঘটনায় ইসরায়েলি বাহিনী ট্যাংক থেকেও গোলাবর্ষণ করেছে বলে জানা গেছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনিদের সাবধান করতে সতর্কতামূলক গুলি চালায়। তবে ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করেছে, সেনাসদস্যরা সরাসরি তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ ছাড়া অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, সাহায্য পণ্যবাহী ট্রাক ও গাধার গাড়িতে মরদেহের স্তুপ রেখে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গাজার এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোট ১১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছে।
এই ঘটনার পরপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি রুদ্ধদ্বার বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। ফ্রান্স এ ঘটনাকে ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হতাহতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং মধ্যস্থতাকারীদের গাজার যুদ্ধ অবসানে অতিদ্রুত একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

চিকিৎসাবিষয়ক আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা মেডিসিন সানস ফ্রন্টিয়ার বলেছে, এই ঘটনা ভয়ঙ্কর। সংস্থাটি অবিলম্বে গাজায় একটি টেকসই যুদ্ধবিরিতির আহ্বান জানান।
গত ৭ অক্টোবর যে সংঘাত শুরু হয়, তাতে গাজায় ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ও নারীর সংখ্যাই ২১ হাজার। এ ছাড়া সাত হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে এবং আহত হয়েছে ৭০ হাজার ৪৫০ জন। হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ত্রাণ নিতে আসা লোকজনের ওপর গুলিবর্ষণের এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে জাতিসংঘ হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রায় তিন লাখ লোক নামেমাত্র খাবার ও পানি নিয়ে বসবাস করছে। পুরো এলাকা দুর্ভিক্ষের হুমকিরে মুখে রয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।