টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি
টানা তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। আজ রোববার (৯ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ গ্রহণ করেন তিনি। দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদি মুর্মু তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
এর আগে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে শপথ অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহেরলাল নেহেরুর পর তিনি একমাত্র ভারতীয়, যিনি এত দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকছেন। খবর এনডিটিভির।
এর আগে আজ নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আজ রোববার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্স (এনডিএ) নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। তবে, কী কারণে তা স্পষ্ট না। যদিও দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও এই প্রথম একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি মোদির নেতৃত্বাধীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল অনুযায়ী, ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৪০টি পায় বিজেপি। তাই বিজেপিকে এবার জোট সরকার গঠন করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে জোটের মন্ত্রিত্বও ভাগাভাগি করতে হবে বিজেপিকে।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লিতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এবার মন্ত্রিপরিষদে সদস্য ৭৮ থেকে ৮১ জন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো থাকবে বিজেপির হাতে।
নরেন্দ্র মোদির জন্ম ১৯৫০ সালে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে। রেল স্টেশনের চা বিক্রেতা বাবার ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। একজন গড়পড়তা ছাত্র হলেও উদ্দীপনামূলক বক্তব্যে তার বাগ্মীতার প্রমাণ পাওয়া যায় স্কুলের বিতর্কে আর নাট্যদলের সঙ্গে নাটক পরিবেশনায়। তবে তার রাজনৈতিক সত্তার বীজটি রোপন হয় মাত্র আট বছর বয়সে রাষ্ট্রীয় সয়ংসেবক সংঘে (আরএসএস) যোগ দেওয়ার মাধ্যমে। আরএসএস ভারতের কট্টর জাতীয়তাবাদী সংগঠন হিসেবেই পরিচিত।
নরেন্দ্র মোদি নিজেকে সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ভারতে হিন্দুদের আধিপত্যকে তুলে ধরতে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। আর এ কারণে ১৮ বছর বয়সে পারিবারিকভাবে বিয়ের সম্পর্কে জড়ানো মোদিকে সম্পর্কের সেই পিছুটানও আটকাতে পারেনি। যদিও তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে কখনোই কাগজে-কলমে বিচ্ছেদ টানেননি। তাই আরএসএসের শীর্ষ পদে যেতে নিয়মরক্ষার প্রয়াস হিসেবে তিনি ব্রহ্মচারীই থেকেছেন।
আজ ভারত তার অধিকার নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে আবির্ভূত। মোদির শাসনামলে ঔপনিবেশিক আমলের ভারতকে দিয়েছে নতুন ধারার বিন্যাস। মোদির শাসনামলেই নতুন করে লেখা হয় পাঠ্যবই, ব্রিটিশ আমলের আইনগুলোকে মুছে দেওয়া হয় আধুনিক রূপ।
গত জানুয়ারিতে তার কাজের ধারা চূড়ান্ত রূপে আবির্ভূত হয় যখন তিনি অযোধ্যায় একটি নতুন হিন্দু মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছিলেন। সেই জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে মোদি বলেছিলেন, মন্দিরের পবিত্রতা দেখাচ্ছে যে ভারত দাসত্বের মানসিকতা থেকে নিজেকে অনেক ওপরে নিয়ে গেছে। নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, ‘জাতি এখন নুতন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।’