অস্ত্র বিরতির ক্ষীণ আশায় এক বছরে গাজা যুদ্ধ
অস্ত্র বিরতির আশায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্বস্তি এবং সেখানে এখনও বন্দিদশায় থাকা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সামান্য লক্ষণের মধ্য দিয়ে গাজা যুদ্ধ ১২তম মাসে এসে পৌঁছাল। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে থাকা পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির সম্ভাবনার বিষয়টি এখনও ক্ষীণ, কেননা যুদ্ধে জড়িত কোনো পক্ষই তাদের অবস্থান থেকে সরে আসছে না। খবর এএফপির।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের মাধ্যমে যে যুদ্ধের শুরু, তা থামাতে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছে সংগঠনটি। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা ও মিসর সীমান্তজুড়ে সৈন্য মোতায়েন রাখার বিষয়ে অনঢ়।
হামাস পরিচালিত গাজার প্রশাসন জানিয়েছে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার ৯৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ইসরায়েলের হামলায়। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার দেওয়া তথ্য অনুসারে, নিহতদের বেশিরভাগই নীরিহ নারী ও শিশু। তাই আরও প্রাণহানি থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলি পক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর জন্য আলোচনা চলছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের সরকারি হিসাব বলছে, হামাসের হামলায় এক হাজার ২০৫ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় এবং তাদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্যেও কিছু লোককে হত্যা করা হয়। ধারণা করা হয়, হামাস ইসরায়েল থেকে ওই দিন ২৫১ জন দেশি-বিদেশি লোককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে ৩৩ জন মারা গেছে আর এখনও ৯৭ জন হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে। গত নভেম্বরে এক সপ্তাহের অস্ত্রবিরতির সময় বাকিদের মুক্তি দেওয়া হয়।
গত রোববার ইসরায়েল এক ঘোষণায় জানায়, একজন ইসরায়েলি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকসহ ছয়জন পণবন্দির মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে তারা। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ইসরায়েলের সাধারণ মানুষ। বাকি বন্দিদের দ্রুত মুক্তির দাবিতে দেশজুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায়ও হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা তেলআবিবসহ দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে জিম্মিদের আশু মুক্তির জন্য সরকারের প্রতি হামাসের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর দাবি জানায়।
এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন থেমে নেই। গতকাল শনিবারও (৭ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি আগ্রাসী হামলা ও গোলাবর্ষণে ১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে গাজা শহরের উত্তরে বিমান হামলায় মারা যায় এক শিশু ও এক নারী। এ ছাড়া বুরেজি শরণার্থী শিবিরে আরেকটি হামলায় মারা যায় চার ফিলিস্তিনি নাগরিক।