পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আদালতের হস্তক্ষেপ বন্ধে সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাব পাস
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আদালতের হস্তক্ষেপ বন্ধে দেশটির সরকার খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে সংবিধান সংশোধনের একটি প্রস্তাব পাস করেছে। রোববার (২০ অক্টোবর) দিনগত গভীর রাতে পাস হওয়া এই প্রস্তাবের ফলে দেশটির আদালত পার্লামেন্টের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে এখন থেকে কোনো রুলিং ইস্যু করতে পারবে না। খবর এএফপির।
পাকিস্তানে গত ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকেই রাষ্ট্র ও সর্বোচ্চ আদালতের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েই চলছিল। ওই নির্বাচনে দেশটির জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ ইমরান খানের দল ব্যাপক ভোট কারচুপির অভিযোগ জানিয়ে আসছিল। এছাড়া পরে কারাগারে বন্দিও করা হয় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা ইমরান খানকে।
গভীর রাতের পার্লামেন্ট সেশনে বিচার বিভাগ সংস্কারে পাস হওয়া প্রস্তাবের আলোকে এখন থেকে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতিকে নির্বাচন করবে একটি পার্লামেন্টারি কমিটি এবং প্রধান বিচারপতি তিন বছরের জন্য নিযুক্ত হবেন। এ ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চও গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসিফ খাজা গত শনিবার বলেছিলেন, এই সংশোধনীর লক্ষ্য হলো পার্লামেন্টের কাজে হস্তক্ষেপ করে বিচার বিভাগের এমন আদেশ প্রদান বন্ধ করা। তিনি বলেন, ‘সবাই এই বিষয়ে একমত হবেন যে পার্লামেন্টের আধিপত্যের বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না।’
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ এই প্রস্তাব পাসের জন্য পার্লামেন্টে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পান। আর এই কাজে তাকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বি দল ও বর্তমানে মুসলিম লীগের অংশীদার পাকিস্তান পিপলস পার্টি। এছাড়া ইমরান খানের মিত্র হিসেবে পরিচিতি থাকলেও কয়েকটি ছোট ধর্মভিত্তিক দল সরকারকে সমর্থন দেয়। প্রস্তাব পাসে পার্লামেন্টে ২২৪টি ভোট প্রয়োজন ছিল আর তা পাস হয় ২২৫টি ভোটে।
ইমরান খানের দল এই প্যাকেজ প্রস্তাবটি পাসে অস্বীকৃতি জানায় যদিও সমঝোতার জন্য তাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়। জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলীয় নেতা ও পিটিআই নেতা ওমর আইয়ুব বলেন, ‘এই সংশোধনী মুক্ত বিচার বিভাগের জন্য কন্ঠরোধকারী। তারা পাকিস্তানের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। কারচুপির নির্বাচনে গঠিত সরকার সংবিধান সংশোধন করতে পারে না।’
পার্লামেন্টে সংবিধান সংশোধনী প্রস্তাবটি পাস হলো এমন সময়ে যখন দেশটির প্রধান বিচারপতি কাজী ফয়েজ ইসার অবসরে যেতে বাকী আর মাত্র কয়েকদিন। আগের আইন অনুসারে তিনি অবসরে গেলে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারকই তার স্থলাভিষিক্ত হতেন। তবে এখন থেকে তা আর হচ্ছে না।