ট্রাম্পের মন জয় করতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব দিতে যাচ্ছেন মোদি
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/modi.jpg)
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। এ বৈঠকে মোদি শুল্ক ছাড়, নতুন বাণিজ্য চুক্তি এবং চীনের বিষয়ে সহযোগিতার প্রস্তাব নিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থন অর্জনের লক্ষ্যেই মোদি এসব উদ্যোগ নিয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মিত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের ওপর শুল্কের চাপ প্রয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নতুন বাণিজ্য চুক্তি, বিনিয়োগ এবং আইন প্রয়োগে সহযোগিতা আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। যদিও ট্রাম্পের প্রথম দফার শাসনামলে মোদি-ট্রাম্প সম্পর্ক উষ্ণ ছিল, তবুও ট্রাম্প ভারতকে "বাণিজ্যের বড় অপব্যবহারকারী" বলে অভিহিত করেছেন। তার চাপিয়ে দেওয়া শুল্ক ভারতের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম শিল্পে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে।
হোয়াইট হাউসে বৈঠকের আগে ভারত সরকারের সূত্র জানিয়েছে, মোদি যুক্তরাষ্ট্র থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), কমব্যাট যান এবং জেট ইঞ্জিন ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি দিতে যাচ্ছেন।
এ ছাড়া, ভারতীয় কর্মকর্তারা মার্কিন কৃষিপণ্য আমদানি, পারমাণবিক শক্তিতে বিনিয়োগ এবং ইলেকট্রনিকস, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও রাসায়নিকসহ এক ডজন খাতে শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করছেন। ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, এসব ক্ষেত্রে ভারতকে আরও অগ্রগতি আনতে হবে।
একজন ভারতীয় কর্মকর্তা বলেছেন, "এটি ট্রাম্পের জন্য একটি ‘উপহার’।”
মোদি এ সফরে মার্কিন বিচার বিভাগের অভিযুক্ত ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানির বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করতে পারেন। আদানি তার বিরুদ্ধে আনা ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/02/13/modi_inner.jpg)
এ ছাড়া, আলোচনায় থাকবে যুক্তরাষ্ট্রে এক শিখ কর্মীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, যা বাইডেন প্রশাসনের সময় ভারতীয় গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে উঠেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি বর্তমানে ৪৫.৬ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের যেসব দেশে আমদানি শুল্ক বেশি, সেসব দেশ থেকে আমদানি পণ্যে তারা পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে।
এদিকে, ট্রাম্প চান ভারত যেন অবৈধ অভিবাসন ইস্যুতে আরও বেশি সহযোগিতা করে। ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক অভিবাসী আসেন, বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে।
মোদি ওয়াশিংটনে অবস্থানকালে ইলন মাস্কের সঙ্গেও দেখা করবেন বলে জানা গেছে। মাস্ক ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং তার কোম্পানি স্টারলিংক ভারতের বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
এ ছাড়া, ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিতে চীনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ভারতও চীনের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং একই বাজারে প্রতিযোগিতা করছে। তবে ভারত সর্বদা চীনের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায় না এবং 'কৌশলগত দ্বন্দ্ব' বজায় রাখে।
ভারত এখনও রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি আমদানি করছে, যেখানে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করে যুদ্ধ সমাপ্তির পথ খুঁজছেন। মোদির সঙ্গে বৈঠকে এই প্রসঙ্গও উঠে আসতে পারে।
এ বৈঠক থেকে স্পষ্ট হবে, ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক কৌশলগত পরিকল্পনায় ট্রাম্প কতটা গুরুত্ব দিতে চান।