প্রয়োগরাজের বুলডোজার অভিযান বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

ভারতের উত্তর প্রদেশ সরকার ও প্রয়োগরাজ শহর প্রশাসনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট বলেছে বুলডোজার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট কিছু অধিবাসীকে বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার বিষয়টি ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘অমানবিক’। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, প্রয়োগরাজের ঘটনা আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। আশ্রয়ের অধিকার ও আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের একটি বিষয় আছে। খবর এনডিটিভির।
ক্ষতিগ্রস্তদের পিটিশনের বিষয়ে আদেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি এ এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইয়ার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বাড়ির মালিকদের জন্য ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণের রায় দেন।
এর আগে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যটির প্রয়োগরাজ শহরে একজন আইনজীবী, একজন অধ্যাপক এবং আরও কয়েকজনের বাড়িঘর ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি জানিয়ে উত্তর প্রদেশ সরকারের তৎপরতার সমালোচনা করে। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আইনজীবী জুলফিকার হায়দার, অধ্যাপক আলি আহমেদ এবং আরও তিনজন জানান, বুলডোজার দিয়ে বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার আগের রাতে তাদের নোটিশ দেওয়া হয়।
পিটিশনারদের আইনজীবী এ বিষয়ে আদালতকে জানান, কর্তৃপক্ষ ভুল করে ওই জায়গাটিকে শনাক্ত করে যাতে বলা হয় সেটি আতিক আহমেদ নামের এক দৃর্বৃত্তের, যিনি কিনা ২০২৩ সালে খুন হন।
আদালত শহর কর্তৃপক্ষকে যে প্রক্রিয়ায় তাদের ভেঙে ফেলার নোটিশ দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ক্ষেত্রে কেন রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানো হয়নি সেটিও জানতে চান আদালত।
রায়ে আদালত বলেন, এই মামলাগুলো আমাদের বিবেককে নাড়িয়ে দিয়েছে। আপিলকারীদের বসবাসের এলাকাটি একেবারেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, যা আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এক্ষেত্রে প্রতিটি মামলার জন্য ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনায় এটাই একমাত্র পথ, যেন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনসরণ করার কথা মনে রাখে।

রায়ে আদালত আরও বলেন, শহরের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আশ্রয়ের অধিকার ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই ধরনের ভাঙচুরের ঘটনা আইন অনুসারে উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অসংবেদনশীলতাকেই প্রকাশ করে।
রায়ে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের আমবেদকার নগরে ভাঙচুরের যে ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে সে দৃশ্য সবাইকে বিচলিত করেছে।
ওই ভিডিওতে দেখা যায় একটি মেয়ে শিশু ভাঙচুরের কাজে নিয়োজিত বুলডোজারের পাশেই তার বইগুলো বুকে আঁকড়ে ধরে আছে।