রাশিয়ার অস্ত্রশিল্পে সহায়তার অভিযোগে চীনকে কাঠগড়ায় তুলল ইউক্রেন

রাশিয়ার অস্ত্রশিল্পে চীন সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। কিয়েভের বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান ওলেহ ইভাশচেঙ্কো জানিয়েছেন, রাশিয়ার ২০টি সামরিক কারখানায় সরবরাহ করা সরঞ্জাম ও উপাদানের বিষয়ে ইউক্রেনের হাতে নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ রয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার (২৬ মে) ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইউক্রইনফর্মে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইভাশচেঙ্কো বলেন, “আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে চীন রাশিয়ার প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য যন্ত্রপাতি, বিশেষ রাসায়নিক উপাদান, গানপাউডার ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরবরাহ করছে।” খবর আল জাজিরার।
চীন বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে আসছে। তবে ইউক্রেন বলছে, চীনের ভূমিকায় তাদের সন্দেহ দীর্ঘদিনের।
গত মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন, চীন রাশিয়াকে গানপাউডার ও অস্ত্র তৈরির উপকরণ সরবরাহ করছে এবং চীনা নাগরিকেরা ড্রোন উৎপাদনেও সহায়তা করছেন।
চীন এসব অভিযোগ “ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে, তবে কিয়েভ ইতোমধ্যেই তিনটি চীনা প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
ইভাশচেঙ্কো আরও জানান, ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে রাশিয়া-চীন যৌথ উদ্যোগে উড়োজাহাজ খাতে অন্তত পাঁচটি সহযোগিতার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে রয়েছে যন্ত্রাংশ সরবরাহ, প্রযুক্তিগত নথিপত্র এবং সরঞ্জাম স্থানান্তর।
তিনি বলেন, “বিশেষায়িত রাসায়নিক উপাদান সরবরাহের ছয়টি বড় ধরনের চালান শনাক্ত করা গেছে।”
ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা প্রধান বলেন, “২০২৫ সালের শুরুতে রাশিয়ান ড্রোনে ব্যবহৃত সমালোচনামূলক ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশের ৮০ শতাংশই এসেছে চীন থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে পণ্যের নাম পরিবর্তন করে বা ছায়া কোম্পানির মাধ্যমে চীন থেকে রপ্তানি করা হচ্ছে মাইক্রোইলেকট্রনিকস তৈরির উপাদান। এটা একটা সুসংগঠিত প্রক্রিয়া।”
এদিকে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রোববার রাতে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
তাদের ভাষ্যমতে, রাশিয়া ২৯৮টি ড্রোন এবং ৬৯টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, যার মধ্যে ইউক্রেন ২৬৬টি ড্রোন ও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়।

আল জাজিরা এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে না পারলেও ইউক্রেন বলছে, এটি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আক্রমণ।