নাইজেরিয়ায় দুই বছরে ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, গত দুই বছরে নাইজেরিয়ার মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে জিহাদি গোষ্ঠী ও অপরাধী চক্রের সহিংসতায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বৈশ্বিক এই অধিকার গোষ্ঠীটি রাষ্ট্রপতি বোলা টিনুবুর সরকারকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। খবর এএফপির।
অ্যামনেস্টি জানায়, ‘দস্যু’ নামে পরিচিত অপরাধী চক্রগুলো গ্রামে আক্রমণ করে, বাসিন্দাদের হত্যা ও অপহরণ করে। এছাড়া মধ্য নাইজেরিয়ার তথাকথিত মিডল বেল্টেও গণহত্যা ঘটে, যেখানে পশুপালক ও কৃষকরা প্রায়শই জমি দখল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই আক্রমণগুলো প্রায়শই ধর্মীয় বা জাতিগত মাত্রা নেয়।
টিনুবু সরকারের অধীনে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি
অ্যামনেস্টির তদন্তে দেখা গেছে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই বছরে, বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ১০ হাজার ২১৭ জন নিহত হয়েছে। টিনুবু ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম দুই বছরের এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত বেনু রাজ্যে সবচেয়ে বেশি ছয় হাজার ৮৯৬ জন নিহত হয়েছে। এরপরই রয়েছে প্লেটো রাজ্য, যেখানে দুই হাচার ৬৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে।

উল্লেখ্য, অ্যামনেস্টি যে সাতটি রাজ্যের তদন্ত করেছে তার মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব নাইজেরিয়ায় জিহাদি সহিংসতার কেন্দ্রস্থল বোর্নোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
দুই বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর টিনুবু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, নিরাপত্তাহীনতা মোকাবেলা করা তার সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নাইজেরিয়ার পরিচালক ইসা সানুসি বলেছেন, ‘পরিবর্তে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে, কারণ কর্তৃপক্ষ সারা দেশে জীবন, শারীরিক অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও হাজার হাজার মানুষের নিরাপত্তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে।’
জিহাদি ও অন্যান্য অপরাধী গোষ্ঠীগুলো দ্বারা বছরের পর বছর ধরে লক্ষ্যবস্তু হয়ে আসা উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হামলার সংখ্যা বেড়েছে।
সানুসি বলেন, ‘বোকো হারাম এবং অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক আক্রমণের তীব্রতা দেখায় যে, রাষ্ট্রপতি টিনুবুর সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো কেবল কাজ করছে না।’
অ্যামনেস্টির অনুমান, বেনু এবং মালভূমি রাজ্যে হামলার ফলে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।