এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত বিমান থেকে ব্ল্যাক বক্স রেকর্ডার উদ্ধার

বৃহস্পতিবার ভারতের আহমেদাবাদ শহরের আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হওয়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স রেকর্ডার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন তদন্তকারীরা। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) ঘটনাস্থল থেকে সেটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে এর আরোহীসহ মাটিতে থাকা লোকজন নিয়ে মোট ২৬৫ জন নিহত হয়।
জানা গেছে, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের উড়োজাহাজটি বিমানবন্দর থেকে আকাশে প্রায় ১০০ মিটার ওঠার পর হঠাৎ করে নিচে নামতে শুরু করে এবং স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে একটি মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর বিধ্বস্ত হয়।
ভয়ঙ্কর এই দুর্ঘটনার শিকার ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছেন একজন। পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালের মেডিকেল স্টাফদের জন্য নির্মিত হোস্টেলের ওপর বিধ্বস্ত হয় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি।
দুর্ঘটনার পর হাসপাতালের বিছানায় থেকে ভারতের ডিডি নিউজ চ্যানেলকে বেঁচে যাওয়া বিশ্বাস কুমার রমেশ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘প্রথমে আমি মনে করছিলাম আমিও মরতে যাচ্ছি, তবে যখন আমি আমার চোখ খুলি, আমি বুঝতে পারি যে আমি বেঁচে আছি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১ বিধ্বস্ত হওয়ার পর উড়োজাহাজটির নোজ এবং ফ্রন্ট হুইল গিয়ে পড়ে মেডিকেল কলেজটির ক্যান্টিনে। সেসময় শিক্ষার্থীরা সেখানে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন।
এদিকে, আহমেদাবাদের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কানন দেশাই বলেছেন, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে এ পর্যন্ত ১৬৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাটিতে থাকা কমপক্ষে ২৪ জন নিহত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, তবে এই সংখ্যা বাড়তে পারে।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন করার পর মৃতের সংখ্যা সরকারিভাবে জানানো হবে।
উড়োজাহাজটিতে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, সাতজন পর্তুগিজ ও একজন কানাডিয়ান যাত্রী হিসেবে ছিলেন। ফ্লাইটটি আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। এ সময় সেটিকে ১২ জন বিমানকর্মীও ছিলেন।
শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার এলাকাটি পরিদর্শন করেন। এ সময় হাসপাতালে বেঁচে যাওয়া বিশ্বাস রমেশের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। আগুনে পোড়া ও অন্যান্য আঘাতে জর্জরিত রমেশ বলেন, সবকিছু আমার চোখের সামনে ঘটে, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না কীভাবে আমি ধ্বংসস্তূপ থেকে বের হয়ে এলাম।
রমেশ বলেন, ‘বিমানটি আকাশে ওঠার এক মিনিট পরই মনে হয় সব কিছু গেছে, আমার তখন মনে হচ্ছিল কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে, এ সময় হঠাৎ বিমানের সবুজ ও সাদা আলোগুলো জ্বলে ওঠে।’