ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’র দাবি মানবে না ইরান

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রকল্প পরিচালক আলী ভায়েজের মতে, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’ দাবি মেনে নেওয়ার সম্ভাবনা নেই। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ‘পুরো অঞ্চলকে পতনের দিকে নিয়ে যেতে পারে’। খবর আল-জাজিরার।
আলী ভায়েজের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক অদ্ভুত দ্বৈত কৌশল অবলম্বন করছেন। ট্রাম্প ‘রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ-এর মাস্কাটে ইরানিদের সঙ্গে দেখা করার মাত্র দুই দিন আগে ইসরায়েলকে ইরানে আক্রমণের জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছিলেন’।
ভায়েজ উল্লেখ করেন, ইরানের দৃষ্টিকোণ থেকে ট্রাম্প একই সঙ্গে আক্রমণের অনুমোদন দিচ্ছেন ও তেহরানের সঙ্গে কূটনীতি অব্যাহত রাখার কথা বলছেন। বর্তমানে ট্রাম্প ‘ইরানিদের আত্মসমর্পণের জন্য অনুরোধ করছেন’।
ভায়েজ মনে করেন, ‘আমি মনে করি ইসরায়েলি ও আমেরিকান বোমার আঘাতের চেয়েও বিপজ্জনক একমাত্র জিনিস হলো আমেরিকান শর্তের কাছে আত্মসমর্পণ করা।’ তিনি এর কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, যদি ইরান পারমাণবিক ইস্যুতে ও ট্রাম্পের দাবিতে আত্মসমর্পণ করে, তাহলে ‘পিচ্ছিল ঢালের কোনো শেষ নেই, যার ফলে শেষ পর্যন্ত শাসনব্যবস্থার পতন ও আত্মসমর্পণ ঘটবে।’
ভায়েজ সতর্ক করে বলেন, ‘সুতরাং ঝুঁকি হলো—ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পতনের সঙ্গে সঙ্গে এটি পুরো অঞ্চলকে পতনের চেষ্টা করবে। এখন এটি আঞ্চলিক দাবানলের ঝুঁকি আগের চেয়েও বেশি।’ এই মন্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোরে ইসরায়েলি হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাকেরি ও ইসলামিক রেভ্যুলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় ইরানের শীর্ষস্থানীয় ছয়জন পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ইরানের পক্ষ থেকে পাল্টা হামলা করা হয় ইসরায়েলে। এরপর থেকে দুই পক্ষই একে অপরের ওপরে হামলা অব্যাহত রেখেছে।