এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীর যেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র সরকার এইচ-১বি ভিসা আবেদনকারীদের জন্য তাদের যাচাই প্রক্রিয়া আরও বিস্তৃত করছে। এখন থেকে আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও (সোশ্যাল মিডিয়া) তদারকি করবে। বিশেষ করে, যেসব আবেদনকারীরা সোশ্যাল মিডিয়া ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তি ছাড়াবেন তারা তদন্তের মুখোমুখি হবেন।
যা থাকছে নতুন নিয়মে
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) জানিয়েছে, এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদনকারী ও তাদের ওপর নির্ভরশীল সবাইকে অবশ্যই তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (সোশ্যাল মিডিয়া) সব প্রোফাইল জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত (পাবলিক) করে দিতে হবে। এর মূল কারণ হলো, আবেদনকারীদের যেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ বা দেশের কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্য না থাকে— তা নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: মার্কিন এইচ-১বি ভিসার ফি বাড়ানোয় লাভবান হতে পারে যেসব দেশ
এর আগে গত জুলাই মাসেও একই ধরনের নির্দেশে শিক্ষার্থী ভিসা আবেদনকারীদের তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল উন্মুক্ত (পাবলিক) করতে বলা হয়েছিল।
এইচ-১বি ভিসা সাধারণত শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রযুক্তি, অর্থ ও প্রকৌশলের মতো ক্ষেত্রে ‘বিশেষজ্ঞ’ জ্ঞানসম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের নিয়োগের জন্য মার্কিন কোম্পানিগুলোকে অনুমতি দেয়। যদিও এটি অস্থায়ী ভিসা, এটি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের একটি পথও তৈরি করে।
গত ২ ডিসেম্বরের নির্দেশনায় কনসুলার কর্মীদের বিশেষভাবে বলা হয়েছে, আবেদনকারীদের লিঙ্কডইন প্রোফাইল ও কাজের ইতিহাস ভালোভাবে দেখতে হবে। বিশেষ করে, যারা ‘ভুল বা মিথ্যা তথ্য’, ‘বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ’, ‘তথ্য যাচাই’, বা ‘সুরক্ষিত মত প্রকাশ দমনের’ সঙ্গে জড়িত সোশ্যাল মিডিয়া বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: ১৯ দেশের অভিবাসন আবেদন স্থগিত করল যুক্তরাষ্ট্র
এই নতুন নিয়ম শুধু আবেদনকারীর জন্য নয়, পরিবারের যেকোনো সদস্য ও এইচ-১বি ভিসা নবায়ন করতে চাওয়া আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ‘যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে কোনো আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রে সুরক্ষিত মত প্রকাশের স্বাধীনতা দমনের জন্য দায়ী, জড়িত বা চেষ্টা করেছেন, তবে তার আবেদন বাতিল করা উচিত।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ‘বাকস্বাধীনতার’ ওপর চাপানো বিধিনিষেধ কমাতে চাইছেন— যা সাধারণত রক্ষণশীলদের কণ্ঠস্বর দাবিয়ে রাখে বলে অভিযোগ। ক্ষমতায় ফিরেই তিনি বাকস্বাধীনতার ‘ফেডারেল সেন্সরশিপ’ নিষিদ্ধ করতে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন।
গত মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর যারা বাকস্বাধীনতা দমনের চেষ্টা করেছেন এমন বিদেশি কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। এর মধ্যে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণ করতে চাপ দেওয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ট্রাম্পের এই কঠোর মনোভাব মূলত ইউরোপকে লক্ষ্য করে, যেখানে আমেরিকার চেয়ে কন্টেন্ট নিয়ন্ত্রণ ও ঘৃণামূলক বক্তব্যের বিরুদ্ধে আরও কঠোর আইন রয়েছে।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক