আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তান

পাকিস্তানে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় গালগিট-বালতিস্তানের দিয়ামের জেলায় ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) স্থানীয় সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্যায় আটকা পড়া ২০০ জনের বেশি পর্যটককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। খবর ডনের।
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি (এনডিএমএ) গালগিট-বালতিস্তান, খাইবার পাখতুনখাওয়া, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা জারি করেছে। একদিন আগেই দিয়ামেরের বাবুসার এলাকায় বন্যায় চারজন পর্যটক নিহত, দুজন আহত ও ১৫ জন নিখোঁজ হন।
সরকারি মুখপাত্র ফয়জুল্লাহ ফারাক এক বিবৃতিতে বলেন, উদ্ধার ২০০ জনেরও বেশি পর্যটককে চিলাসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জন্য হোটেল ও গেস্ট হাউসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা আটকা পড়ে থাকার পর পর্যটকরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন।
দিয়ামেরের জেলা প্রশাসক আতাউল্লাহ কাকার জানান, নিখোঁজ পর্যটকদের সন্ধানে এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে দিয়ামের প্রশাসন বাবুলসারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। সেখানে পর্যটক চলাচল স্থগিত। প্রশাসন স্থানীয় বাসিন্দাদেরও নিরাপদ স্থানে সরে যেতে এবং সড়ক পুরোপুরি মেরামত না হওয়া পর্যন্ত বাবুসার সড়কে ভ্রমণ না করতে অনুরোধ করেছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বাবুলসারের আটকা পড়া পর্যটকদের চিকিৎসা সহায়তা ও খাবার সরবরাহ করছে। একজন স্থানীয় সমাজকর্মী মুহাম্মদ আলী জানান, বন্যায় প্রায় ৩০টি গাড়ি ভেসে গেছে। তবে বেশিরভাগ মানুষকে স্থানীয়রাই উদ্ধার করেছেন।
গালগিট-বালতিস্তান সরকারের মুখপাত্র বলেন, বন্যায় ৫০টিরও বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাবুলসারে একটি গমের ডিপো, একটি বালিকা বিদ্যালয়, একটি পুলিশ চেকপয়েন্ট, একটি পর্যটন পুলিশ আশ্রয়কেন্দ্র ও চারটি সেতু বন্যায় ভেসে গেছে। এছাড়া দুটি মসজিদ ও একটি উইন্ডমিলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় কারাকোরাম হাইওয়ের (কেকেএইচ) একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হাজার হাজার পর্যটক ও যাত্রী আটকা পড়েছিলেন। তবে এখন মহাসড়ক ও সংযোগ সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।