থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ, কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে

থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার মধ্যে বিতর্কিত সীমান্ত এলাকায় নতুন করে সেনা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে থাই সেনাবাহিনী জানায়, উত্তরের ওডার মিনচি প্রদেশে অবস্থিত বিতর্কিত তা মোয়ান থম মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় কাম্বোডিয়ান বাহিনী গুলি চালায়। খবর আল জাজিরার।
থাই সামরিক বাহিনী জানায়, কাম্বোডিয়া প্রথমে একটি নজরদারি ড্রোন পাঠায়, এরপর ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সেনা পাঠিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হয়।
এর আগে মে মাসেও এই দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ সামরিক সংঘাতে রূপ নেয়, যেখানে একজন কাম্বোডিয়ান সেনা নিহত হন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ক্রমাগত তীব্র হয়ে ওঠা সীমান্ত বিরোধ তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে তলানিতে ঠেলে দিয়েছে। একে অপরকে দোষারোপ করে সীমান্ত বন্ধ, পণ্য আমদানি নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে দুই দেশ।
ঘটনার আগে বুধবার একটি ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক থাই সেনা আহত হয়ে তার ডান পা হারান। থাইল্যান্ড অভিযোগ করে, কাম্বোডিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ভূখণ্ডে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে।
থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উবোন রাচাথানি প্রদেশ ও কাম্বোডিয়ার প্রিহা বিহার প্রদেশের মধ্যকার সীমান্ত এলাকায় ১৬ জুলাই তিন সেনা টহল দেওয়ার সময় বিস্ফোরণে আহত হন, যাদের মধ্যে একজন পা হারান।
তবে কাম্বোডিয়ার দাবি, থাই সেনারা পূর্বনির্ধারিত পথ থেকে সরে গিয়ে পুরোনো যুদ্ধের সময় পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন।
এই ঘটনার জেরে থাইল্যান্ডের ক্ষমতাসীন ফেউ থাই পার্টি জানায়, তারা কাম্বোডিয়ায় নিযুক্ত থাই রাষ্ট্রদূতকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে এবং একইসঙ্গে কাম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। থাইল্যান্ড আরও জানায়, তারা কাম্বোডিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিম্নস্তরে নামিয়ে এনেছে।
এর জবাবে কাম্বোডিয়া তাদের সব কূটনৈতিক প্রতিনিধি থাইল্যান্ড থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে এবং থাই কূটনীতিকদেরও দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে।

কাম্বোডিয়ার সরকার জানায়, তারা থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্কের মাত্রা "দ্বিতীয় সচিব" পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে, যা দুই দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন কূটনৈতিক সম্পর্কের স্তর।
দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনার জেরে কাম্বোডিয়া ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড থেকে জ্বালানি, গ্যাস, ফল ও সবজির আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।