রুশ সাবমেরিন নিয়ে ন্যাটো প্রধানের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য

ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটে রাশিয়ার নৌবহরের দুরবস্থা নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ অক্টােবর) স্লোভেনিয়ায় এক ভাষণে রুটে বলেন, “১৯৮৪ সালের টম ক্ল্যান্সির উপন্যাস দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর-এর মতো দৃশ্য আর নেই। এখন মনে হচ্ছে, যেন ‘নিকটতম মেকানিক খোঁজার অভিযান’ চলছে।” খবর বিবিসির।
রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিট জানিয়েছে, তাদের ডিজেলচালিত সাবমেরিন নোভোরোসিস্ক ফ্রান্সের উপকূলে ভেসে উঠেছিল ন্যাভিগেশন নিয়ম মেনে চলার জন্য। ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সময় সাবমেরিনটিকে একটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ ও হেলিকপ্টার পর্যবেক্ষণ করছিল।
তবে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার (১১ অক্টােবর) জানিয়েছিল, সাবমেরিনটি উত্তর সাগরে টেনে নেওয়া হচ্ছিল — যা প্রযুক্তিগত ত্রুটির ইঙ্গিত দেয়।
রাশিয়া দাবি করেছে, সাবমেরিনে কোনো ত্রুটি হয়নি। ব্ল্যাক সি ফ্লিটের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ফ্রান্সের উপকূলে নোভোরোসিস্ক সাবমেরিনের জরুরি ভেসে ওঠার খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক ন্যাভিগেশন আইনের অধীনে সাবমেরিনগুলোকে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমের সময় ভেসে থাকতে হয়।
এদিকে, রুশ নিরাপত্তা সংক্রান্ত ফাঁস প্রকাশের জন্য পরিচিত টেলিগ্রাম চ্যানেল ভিসিএইচকে-ওজিপিইউ দাবি করেছে, ২৭ সেপ্টেম্বর সাবমেরিনটির জ্বালানি ট্যাঙ্ক থেকে তেল লিক হচ্ছিল জিব্রালটার প্রণালিতে, যা বিস্ফোরণের ঝুঁকি তৈরি করেছিল।
সাবমেরিনটি ভূমধ্যসাগর থেকে ফেরার পথে ছিল। ব্রিটিশ রয়্যাল নেভি জানায়, ৭ থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত তারা সাবমেরিনটিকে তিন দিন নজরদারিতে রেখেছিল।
ন্যাটো মিশনের অংশ হিসেবে এইচএমএস আয়রন ডিউক সাবমেরিন ও এর সাপোর্ট টাগবোটকে ইংলিশ চ্যানেল থেকে উত্তর সাগর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে। এরপর ডাচ নৌবাহিনীও সেটিকে এসকর্ট করে বলে নিশ্চিত করেছে নেদারল্যান্ডসের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
রুটে তার ভাষণে বলেন, “ভূমধ্যসাগরে এখন রুশ নৌবাহিনীর উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে।”

ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যাল কার্নস বলেছেন, “রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও ন্যাটো মিত্রদের ঐক্য প্রদর্শনের এটি একটি পরিষ্কার উদাহরণ।”
এর আগে জুনে বিবিসির তদন্তে দেখা যায়, একটি রুশ যুদ্ধজাহাজ ভুয়া সিগন্যাল আইডি ব্যবহার করে দুটি নিষেধাজ্ঞাগ্রস্ত তেল ট্যাংকারের সঙ্গে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়। এটি রাশিয়ার তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’-এর অংশ, যারা গোপনে নিষিদ্ধ তেল পরিবহন করে থাকে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাটি ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে নৌবাহিনী পর্যায়ের শীতল উত্তেজনাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।