কর্নেল রান্দ্রিয়ানিরিনা মাদাগাস্কারের নতুন প্রেসিডেন্ট

মাদাগাস্কারের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে আজ শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) শপথ নিয়েছেন সেনাবাহিনীর কর্নেল মিকায়েল রান্দ্রিয়ানিরিনা। দেশটির রাজনীতিতে পট পরিবর্তনের ধারায় গত কয়েকদিনে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল ও সাবেক প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার দ্বীপদেশটি ছেড়ে পালানোর পর নতুন অভ্যুত্থানের শঙ্কার মধ্যেই শপথ নিলেন রান্দ্রিয়ানিরিনা। খবর এএফপির।
গত মঙ্গলবার অভিসংশনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর সামরিক বাহিনী এক ঘোষণায় জানায়, তারা রাজধানী আন্তানানারিভোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। রান্দ্রিয়ানিরিনা সামিরিক বাহিনীর ক্যাপস্যাট ইউনিটের নেতৃত্বে ছিলেন। এই ইউনিটটি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল।
শুক্রবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে মিকাইল রান্দ্রিয়ানিরিনা বলেন, ‘দেশের পট পরিবর্তনের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত আজ।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি চমৎকার সংবিধানের খসড়া প্রণয়নের লক্ষ্যে জাতির চালিকা শক্তির সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করব আমরা। এ লক্ষ্যে গণভোট ও নির্বাচন আয়োজনে নতুন সংস্থার জন্য নির্বাচনি আইন প্রণয়নে ঐকমত্যে পৌঁছাব আমরা।’
রান্দ্রিয়ানিরিনা সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য যুব সম্প্রদায়কে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অনুরোধে ‘অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা’ এড়াতেই সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে।
শপথ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় রাজধানী আন্তানানারিভোতে সামরিক কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, জেন-জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রান্দ্রিয়ানিরিনা তার নতুন ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করতে বেশ তৎপর ছিলেন এবং এ প্রসঙ্গে তিনি এই ক্ষমতাগ্রহণকে কোনো অভ্যুত্থান ছিল না বলে তুলে ধরেন, যার প্রমাণ হিসেবে তিনি দেশটির সাংবিধানিক আদালতের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।
রান্দ্রিয়ানিরিনা প্রতিশ্রুতি দেন তিনি ১৮ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করবেন। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যমে বলেন, দেশ সামরিক শাসনের মাধ্যমে নয়, বেসামরিক ব্যক্তিদের মাধ্যমেই পরিচালিত হবে।
৫১ বছর বয়সী এই কর্নেল শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন সামরিক পোশাকের পরিবর্তে স্যুট পরে। অনুষ্ঠানে তিনি ফরাসি ভাষায় বিদেশি প্রতিনিধিদের জাতীয় জীবনের পথনির্দেশ তৈরি ও বাস্তবায়নে মাদাগাস্কারের সঙ্গী হওয়ার আমন্ত্রণ জানান।
রান্দ্রিয়ানারিনা বলেন, ‘আমরা অতীতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বদ্ধপরিকর। আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো দেশের প্রশাসনিক, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা।’