শান্তিতে নোবেল পেলেন ইরানের মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি
ইরানের নারী অধিকার বিষয়ক প্রচারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের ভূষিত হয়েছেন। অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস অ্যান্ডারসন পুরস্কার ঘোষণার সময় বলেন, ‘ইরানে নারীদের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি সবার জন্য স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে নিশ্চিত করতে নার্গিস মোহাম্মদির লড়াইয়ের জন্য তাঁকে এই সম্মানে সম্মানীত করা হয়েছে।’ খবর আলজাজিরার।
২০১৯ সালে সহিংস প্রতিবাদের শিকার একজন ইরানি নাগরিকের স্মরণে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কারণে গত নভেম্বরে ইরানি কর্তৃপক্ষ নার্গিস মোহাম্মদিকে গ্রেপ্তার করে। মোহাম্মদির রয়েছে দীর্ঘ কারাবাসের ইতিহাস ও কঠোর দণ্ড লাভের অভিজ্ঞতা। পাশাপাশি তার মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
আজকের এই ঘোষণার পর আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলো সিটি হলে নোবেল পুরস্কারের প্রবক্তা আলফ্রেড নোবেলের জন্মদিনে অনুষ্ঠিত হবে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান।
এদিকে, নার্গিস মোহাম্মদির নোবেল পুরস্কার অর্জন তিনি যে সংগ্রাম ও আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেটিকে আরও উৎসাহ যোগাবে বলে জানিয়েছেন তাঁর স্বামী।
প্যারিসে নিজ বাড়িতে এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদির স্বামী তাঘি রামাহি বলেন, ‘এই নোবেল পুরস্কার নার্গিসকে মানবাধিকারের লড়াইকে আরও পরিশীলিত করবে। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো যে সত্যিকার অর্থে এই পুরস্কার নারীদের জীবন ও স্বাধীনতার জন্য।’
৫১ বছর বয়সী নার্গিস মোহাম্মদি তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তিনি একজন ইরানি লেখিকা, মানবাধিকার কর্মী এবং ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের (ডিএইচআরসি) উপপরিচালক।
নার্গিস মোহাম্মদি সম্প্রতি রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণার জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ১২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। তাকে দণ্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৫৪টি দোররাও দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি জানায় যে, তারা আশা করছে ডিসেম্বরে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ইরানি কর্তৃপক্ষ তাঁকে মুক্তি দেবে। এক সংবাদ সম্মেলনে রেইস অ্যান্ডারসন এই আহ্বান জানান। এছাড়া জাতিসংঘও এক বিবৃতিতে ইরানি কর্তৃপক্ষের প্রতি নার্গিস মোহাম্মদিকে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।