লেখক হোসেনউদ্দীন হোসেনের জীবন সংকটাপন্ন
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও গবেষক হোসেনউদ্দীন হোসেন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে তার ব্রেইন হ্যামারেজ ধরা পড়েছে। হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর চিকিৎসা চলছে। আজ বুধবার (১৬ মে) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হোসেনউদ্দীন হোসেনের ছোট মেয়ে শাহানাজ রাহানা রত্না।
শাহনাজ রাহানা রত্না বলেন, ২০১৯ সালে বাবার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। পরবর্তীতে গলব্লাডারে পাথর ধরা পড়ে। এ ছাড়া তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদিন তাকে যশোর শহরের কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সিএমএইচে নেওয়া হয়।
রত্না জানান, আজ বৃহস্পতিবার বাবার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। বেশির ভাগ সময় চেতনাহীন থাকছেন। কেউ ডাকলে একটু আধটু চোখ মেলে দেখছেন। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেছে। যে কারণে প্রতিদিন দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে। সিটিস্ক্যান রিপোর্টে বাবার ব্রেইন ড্যামেজ হয়েছে ধরা পড়েছে। এছাড়া তার ফুসফুসে পানি জমেছে।
হোসেনউদ্দীন হোসেন ১৯৪১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজ গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের পর ঝিকরগাছা ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৫৭ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৯ সালে সম্পন্ন করেন উচ্চ মাধ্যমিক। ১৯৫৫ সালে তার প্রথম কবিতা কলকাতার দৈনিক পত্রিকা লোকসেবকে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তার বিভিন্ন প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ঢাকা ও কলকাতার বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ হওয়া শুরু করে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন এই কবি। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে—নষ্ট মানুষ, অমৃত বৈদেশিক, সাধুহাটির লোকজন, ইঁদুর ও মানুষেরা, প্লাবন এবং একজন নুহ, ভলতেয়ার ফ্লবেয়ার কলসত্ব ত্রয়ী উপন্যাস ও যুগমানস, ঐতিহ্য আধুনিকতা ও আহসান হাবীব, বাংলার বিদ্রোহ, সমাজ সাহিত্য দর্শন প্রবন্ধ, রণক্ষেত্রে সারাবেলা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি, লোকলোকোত্তর গাঁথা কিংবদন্তী, বনভূমি ও অন্যান্য গল্প, অনন্য রবীন্দ্রনাথ প্রমুখ।