ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু : সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা
ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালতে এ মামলা করেন নিহতের ছেলে আহমদ আব্দুর রাফি।
এ বিষয়ে আদালতে বেঞ্চ সহকারি (পেশকার) হেলাল উদ্দিন মামলা ও আদেশের বিষয়টি জানিয়ে বলেন, ৫২ বছরের মারুফা বেগম মেরী। তিনি পিত্তথলিতে পাথরের অপারেশনের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। সেখানে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে আদালতে হাসপাতালের চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভিকটিমের ছেলে আহমদ আব্দুর রাফি। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পেশকার বলেন, মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-১ অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. নাদিম আহম্মেদ, ডা.তানিয়া ও ডা.আরাফাত।
আরজি থেকে থেকে জানা যায়, মারুফা বেগম মেরী পিত্তথলিতে পাথর অপারেশনের জন্য গত ৩ ডিসেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-১ এর ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের অধীনে ভর্তি হন। আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পিত্তথলির পাথর অপারেশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ১৮ ডিসেম্বর তার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের আধঘণ্টা পর ডা. নাদিম জানান, রোগীর হার্নিয়া ছিল, অপারেশন করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হার্নিয়ার বিষয়ে তাদের কিছু জানাননি চিকিৎসকরা।
এদিকে অপারেশন করার সময় ভিকটিমের গাট ছিদ্র করে ফেলা হয়। তবে বিষয়টি তারা গোপন রাখেন। গাট ছিদ্র সংক্রান্ত জটিলতায় ভিকটিমের শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে জ্বর ও ডায়রিয়া হয় এবং পেট ফুলে যায়। পরবর্তীতে আসামিরা বিষয়টি নিয়ে ভুল স্বীকার করে। ৬ দিন পর ২৪ ডিসেম্বর ভিকটিমের গাট ছিদ্রের বিষয়টি জানানো হয়। পরে দ্বিতীয়বার অপারেশনের সিদ্ধান্ত হয়, চিকিৎসার খরচ বহন করবে চিকিৎকেরা। মারুফা বেগমের আবার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের ২৪ ঘণ্টা পর ৩ জানুয়ারি আইসিইউ থেকে তাকে কেবিনে দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আবার আইসিইউতে রাখা হয়। ৪ জানুয়ারি মারুফা বেগম মারা যান।
এ ঘটনার পর ভিকটিমের পরিবার শেরেবাংলা নগর থানায় যান মামলা করতে। কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে তাদের আদালতে আসার পরামর্শ দেন। মে মোতাবেক বৃহস্পতিবার আদালতে এসে মামলা করেন ভিকটিমের পরিবার।