আটক সব শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
রাজধানীতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে সারা দেশে আটক শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেনে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। এ জন্য তাঁরা সরকারকে ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে শুধু নয়, ঢাকাসহ সারাদেশে আটক সব শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিক যাদের বিনা কারণে আটক করা হয়েছে, তাদের ছেড়ে দিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের ব্যানারে আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, মানবাধিকারনেত্রী শিরীন হক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মির্জা তাসলিমা সুলতানা, বেসরকারি সংস্থা উবিনীগের (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নূর ও সদস্য রুমি প্রভা।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে আটক ছাত্র-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ বিনা বিচারে আটক ও আইনানুগ ব্যবস্থা ছাড়া আটকদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এটা হচ্ছে আমাদের প্রধান দাবি।
অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের সব শিক্ষার্থীকে যদি ছেড়ে দেওয়া না হয়, যদি হত্যার বিচার করা না হয়, যদি অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গন খুলে দেওয়া না হয়, তাহলে আমাদের বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আরও কঠোর ও অব্যাহত কর্মসূচি দেওয়া হবে।
অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, সারাদেশে অজস্র কারাগার গড়ে তোলা হয়েছে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা আটকের মাধ্যমে। জুলাইয়ের হত্যাকাণ্ডে যারা প্রাণ হারিয়েছে সেই আন্দোলনের হাজার হাজার ছেলেমেয়েকে ব্লক রেইড দিয়ে কারাগারগুলো ভরে ফেলা হয়েছে। এই অবস্থা আজই থামাতে হবে।
অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, আমাদের সন্তানদের রক্তে রঞ্জিত করার জন্য আপনাদের ওইখানে বসিয়ে রাখা হয়নি। সব কারফিউ তুলে নেবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তুলে নেবেন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। তা আটকে রাখার অধিকার আপনাদের কারো নেই।
মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, আমাদের অনেক শিক্ষার্থী কারাগারে। আটকে রাখা সব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিতে হবে।
রুশাদ ফরিদী বলেন, আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল (শুক্রবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিকেল ৩টায় ‘দ্রোহযাত্রা’ নামে একটি সমাবেশ হবে। এই সমাবেশে ছাত্র, শিক্ষক ও সুধীসমাজকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।