নওগাঁর মান্দায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীরা
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সহিংসতায় নওগাঁর মান্দায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু, পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
সহিংসতার ঘটনায় গত ১৮ জুলাই মান্দা থানায় বিষ্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটা মামলা করা হয়। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মাসুদ রানা আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে ১০০ জনকে আসামি করে ওই মামলা করেন। ওইদিনই মান্দা উপজেলা যুবদল নেতা শান্ত মোল্লা, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল ওহাব ও শ্রমিক দল নেতা ইউসুফ লিটনসহ চারজনকে তাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার শুরু করে। আজ শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত বিএনপির ২২ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় প্রতিরাতেই পুলিশ কোনো না কোনো নেতাকর্মীর বাড়িতে রেইড দিচ্ছে, কিন্তু কাউকেই বাড়িতে পাচ্ছে না। দিনের বেলায় সাদা পোশাকের পুলিশসহ বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থার লোকেরা সমগ্র উপজেলার হাট-বাজারসহ জনবহুল এলাকায় ঘুরে ঘুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।
বিএনপির নেতারা বলেন, এভাবে গ্রেপ্তার করে এবং গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে শত শত নেতাকর্মীকে ঘরছাড়া করেছে পুলিশ। ফলে পলাতক নেতাকর্মীদের পরিবারগুলো অসহায় হয়ে পড়েছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে এভাবে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। ফলে কোনো কোনো পরিবারকে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়কদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে মান্দা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. ইকরামুল বারী টিপু মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় এভাবে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মান্দা থানার এই মামলা সম্পূর্ণ কাল্পনিক, বানোয়াট ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক।’ তিনি মামলার ঘটনাস্থলে প্রকাশ্য তদন্তের দাবি করে বলেন, কোনো রকম নাশকতার ঘটনার প্রমাণ দিলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দিবেন।
ডা. ইকরামুল বারী টিপু দলের নেতাকর্মীদের বিনাকারণে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে দাবি করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি অহেতুক গ্রেপ্তার বন্ধ করতে পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
নওগার মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, ‘মান্দা থানার করা নাশকতার মামলায় এ পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান আছে। নাশকতার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’