সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী, কুষ্টিয়া
ইবিতে নবীনদের র্যাগিংয়ের অপরাধে কারাগারে ৫ শিক্ষার্থী
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীনদের র্যাগিংয়ের অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযুক্তদের কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে শুনানি শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে মঙ্গলবার তারেক হোসাইন নামে ভুক্তভোগী এক নবীন শিক্ষার্থী ইবি থানায় মামলা করে। পরে ওই পাঁচ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন–বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাব্বির হোসেন, লিমন হোসেন, শেহান শরীফ, কান্ত বড়ুয়া, শফিউল্লাহ, তরিকুল, মুকুল, জিহাদ এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সঞ্জয় বড়ুয়া। অভিযুক্ত সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে তাদের র্যাগিং করে আসছিলেন। তারা ভুক্তভোগীদের অশোভন অঙ্গভঙ্গি, বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদানসহ নানাভাবে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন।
ভুক্তভোগী তারেক হোসাইন বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে এসেছি মাত্র ১৭ দিন। তারা আমাদের ১৭ দিনে কী পরিমাণ মানসিক নির্যাতন করেছে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা এসবের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আরেক ভুক্তভোগী ছাত্র রাকিব বলেন, আমাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা তাদের শাস্তির দাবি জানাই।
র্যাগিংয়ের মতো নিকৃষ্ট ঘটনার তদন্তে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেনকে প্রধান ও সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন—সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম ও হলের আবাসিক শিক্ষক রসুল করিম। কমিটিকে আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন বলেন, সোমবার গভীর রাতে র্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে ইবি প্রশাসন। পরে ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে মামলা করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
