জায়েদ খান ছলনার আশ্রয় নিয়েছে, শপথ অবৈধ : ইলিয়াস কাঞ্চন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে চিত্রনায়ক জায়েদ খানের শপথ গ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করেছেন সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তাঁর দাবি, জায়েদ কোর্টের ‘ভুয়া কাগজ’ দেখিয়ে শপথ গ্রহণ করেছেন।
আজ সোমবার রাত সোয়া ৭টার দিকে বিএফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করে জায়েদ খানের শপথ অবৈধ ঘোষণা করেন সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আপনারা জানেন গত শুক্রবার আমাদের জায়েদ সাহেব (জায়েদ খান) আপনাদের এ জায়গার মধ্যে একটি সার্টিফায়েড কপি দিয়েছিলেন এবং উনি নিজেই বলেছিলেন যে আমি তাঁর কাছে মামলার সার্টিফায়েড কপি না পেলে তাঁকে শপথ গ্রহণ করাব না। উনি এটা জোগাড় করেছেন এবং সেটা আপনাদের কাছে শো করেছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমি জায়েদ খানসহ আরও পাঁচ জনকে শপথ করিয়েছি। তার মধ্যে মনোয়ার হোসেন ডিপজল, অরুণা বিশ্বাস, সুচরিতা, জয় চৌধুরী ছিলেন আর আমাদের পাশে ছিলেন অঞ্জনা সুলতানা, যিনি আগেই শপথ নিয়েছিলেন।’
ইলিয়াস কাঞ্চন আরও বলেন, ‘তার আগে জায়েদ খান আমাকে ল ফার্মের একটা সত্যায়িত চিঠি দেখিয়েছিল। আমি বলেছিলাম, ল ফার্মের সত্যায়িত কপি দিয়ে আমি তোমার শপথ করাব না। আমাকে আদালতের অরিজিনাল সার্টিফায়েড কপি দিতে হবে। ওইটা দুই-তিন দিন আগের ঘটনা। তার পরে যেদিন শপথ নিল, সেদিন সে আমাকে কপি শো করল। কপি শো করার পর সে শপথ নিয়েছে। মিটিংয়েও বসেছে। সেদিন আমিসহ মিটিংয়ে সাত জন ছিলাম। আর সাত জন হলে কোরাম পূর্ণ হয়। আমি মিটিং করেছি। কিন্তু এর মধ্যে আমি জানতে পেরেছি এবং সেদিন আমি তাকে বললাম, তুমি যে আমাকে সার্টিফায়েড কপি দেখালা, সেটার একটা ফটোকপি আমাকে দাও। তখন বলে যে, হ্যাঁ ভাই আমি আপনাকে ফটোকপি দিচ্ছি। কিন্তু মিটিং শেষ করার পরেও সে আমাকে ফটোকপি দিল না।’
পরে ইলিয়াস কাঞ্চন যুক্ত করেন, ‘আজ আমি তাকে (জায়েদ খান) ফোন করে বললাম, তুমি আমাকে ফটোকপি দিচ্ছ না কেন। তখন সে এবং তার দুজন আইনজীবীসহ আমার অফিসে আসল...। ফটোকপি পাঠানোর পর আমি দেখলাম, আমাকে যে ফটোকপি দিল, যেটা আপনাদের অরিজিনাল সার্টিফিকেট হিসেবে শো করেছিল, সেটা ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখের। ৯ তারিখে আরেকটা রায় যে হয়েছিল, সেটার সার্টিফায়েড কপি।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘যেহেতু সত্যের বিপরীতে এবং ছলনার আশ্রয় নিয়েছে, শিল্পী সমিতির সভাপতিকে ধোঁকায় ফেলেছে, শিল্পী সমিতিকে ধোঁকায় ফেলেছে; সেহেতু জায়েদ সাহেবের যে শপথ নেওয়া, এটা কোনও ভাবেই আর গ্রহণযোগ্য নয়... যেহেতু অরিজিনাল সার্টিফিকেটের কপি দেয়নি, সেহেতু তার মিটিংয়েও অ্যাটেন্ড করা বৈধ নয়। এবং তার বৈধ না হওয়ার কারণে কোরামও পরিপূর্ণ হয়নি। সেদিনের মিটিংকে আমি ডিসমিস করলাম... সে বাদ দিয়ে বাকি যে চার জন, তাদের শপথ ঠিক আছে; কিন্তু জায়েদ সাহেবের শপথকে আমি গ্রহণ করলাম না।’
গত শুক্রবার (৪ মার্চ) বিকেলে বিএফডিসিতে জায়েদ খানসহ পাঁচ জনকে শপথবাক্য পাঠ করান সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে জায়েদ খান ও নিপুণ আক্তারের দ্বন্দ্ব সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।