ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যুর গুজব, যা বললেন ছেলে জয়

লন্ডনে জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চনের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর ছেলে ও নিসচার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিরাজুল মইন জয় কানাডা থেকে এক বিবৃতিতে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে জয় বলেন, ‘বাবা বর্তমানে অসুস্থ। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে নিয়মিতভাবে। দয়া করে কেউ কোনো গুজবে কান দেবেন না। আমি দেশবাসীসহ সবার কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা বাবার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন।’
জয় আরও বলেন, ‘বাবার অসুস্থতার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে দেশ-বিদেশে “নিরাপদ সড়ক চাই”-এর কর্মী, বাবার ভক্ত এবং সাধারণ মানুষ যে আন্তরিকভাবে দোয়া করছেন, বিশেষ করে আজ জুমার নামাজে বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন—এর জন্য আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই।’
তবে কিছু ইউটিউবার ও ফেসবুক ব্যবহারকারীর কর্মকাণ্ডে হতাশা প্রকাশ করে জয় বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, কিছু ইউটিউবার ও ফেসবুক ব্যবহারকারী সামান্য ভিউয়ের আশায় বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রকাশ করছেন। এগুলো জনমনে আঘাত হানছে এবং আমার বাবার ভক্তদের কষ্ট দিচ্ছে। আমরা এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।’
বর্তমানে ইলিয়াস কাঞ্চন লন্ডনের হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। গত আগস্টে লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে তাঁর মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানে টিউমারের কিছু অংশ অপসারণ করা হয়, তবে পুরোটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি ঝুঁকির কারণে। এখন তিনি নিচ্ছেন রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি—‘টার্গেট থেরাপি’। পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহে পাঁচ দিন করে ছয় সপ্তাহ এই থেরাপি চলবে। এরপর চার সপ্তাহ তাঁকে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে।
গত ৪ অক্টোবর দুপুরে ইলিয়াস কাঞ্চনের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে তার জামাতা আরিফুল ইসলাম জানান, ইলিয়াস কাঞ্চন গত ২৬ এপ্রিল থেকে লন্ডনে আছেন। সেখানে হার্লি স্ট্রিট ক্লিনিকের অনকোলজিস্ট ভিনায়ার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। গত ৫ আগস্ট লন্ডনের উইলিংটন হাসপাতালে অধ্যাপক ডিমিট্রিয়াসের নেতৃত্বে তার মস্তিষ্কে একটি সফল অস্ত্রোপচার করা হয়। টিউমারের কিছু অংশ ইতোমধ্যে অপসারণ করা হয়েছে। পুরো টিউমার অপসারণ করা হলে জীবনহানিসহ প্যারালাইজড হয়ে চলনশক্তি ও কথা বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি ছিল বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে টিউমারের কিছু অংশ অপসারণ করা হয়।
আরিফুল ইসলাম আরও জানান, টিউমারের বাকি অংশ রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। গত শুক্রবার থেকে এই ‘টার্গেট থেরাপি’ শুরু হয়েছে। এটি সপ্তাহে পাঁচ দিন করে ছয় সপ্তাহ ধরে চলবে। এরপর তিনি চার সপ্তাহ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
দীর্ঘদিন লন্ডনে থাকার কারণে ইলিয়াস কাঞ্চনও মানসিকভাবে কিছুটা ভেঙে পড়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উনি তো সব দেখছেন, বুঝছেন। ওনার মনও কিছুটা ভেঙে পড়েছে। কর্মব্যস্ত জীবন ছেড়ে লন্ডনের ঘরবন্দী জীবন তাকে বিচলিত করছে। থেরাপির কারণে তার শরীরে ক্লান্তি এসেছে এবং কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। তাই চিকিৎসকরা তাকে ফোনে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তবুও তিনি নিসচার বিভিন্ন কার্যক্রমের খোঁজখবর নিচ্ছেন।’