এগিয়ে যাচ্ছে বিএফডিসি
বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে সব রকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনকে (বিএফডিসি) ঢেলে সাজানো হচ্ছে, অ্যানালগ যন্ত্রপাতিকে রূপান্তর করা হচ্ছে ডিজিটালে। একটি চলচ্চিত্র শুটিং থেকে শুরু করে লাইট, ক্যামেরা, ডাবিং, এডিটিং, কালার মিক্সসহ সব কাজই করা যাবে এই প্রতিষ্ঠানে। সামনে ছবি মুক্তির কন্ট্রোল প্যানেল চালুর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানালেন বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ।
এখন থেকে আর উচ্চমূল্য দিয়ে দেশের বাইরে বা বাইরের প্রোডাকশন হাউস থেকে সহযোগিতা নিয়ে চলচ্চিত্র বানাতে হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেন তপন কুমার ঘোষ। এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রোডাকশন হাউস গড়ে উঠেছে, যারা উচ্চমূল্য নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য সরঞ্জামাদি দিচ্ছে। গত তিন বছরের চেষ্টায় আমরাও সক্ষমতা অর্জন করেছি। আমরাও এখন থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণে সব ধরনের সাপোর্ট দিতে পারব।’
কোন ধরনের যন্ত্রপাতি রয়েছে বিএফডিসিতে—জানতে চাইলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এরই মধ্যে আমাদের পাঁচটি ডিজিটাল এডিটিং প্যানেল, একটি কালার গ্রেডিং মেশিন আনা হয়েছে। পুরাতন শব্দ ভবনের দ্বিতীয় তলায় সেগুলো স্থাপন করা হয়েছে। আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। কালার দেখার জন্য বড় পর্দার প্রজেকশন আছে।’
শব্দ গ্রহণের বিষয়ে তপন কুমার বলেন, ‘তিনটি ডাবিং, মিক্সিং ও রি-রেকর্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে, যেখানে শব্দ গ্রহণের যাবতীয় কাজ করা যাবে।’ ক্যামেরার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে পাঁচটি সনি এফ-৫৫ ক্যামেরা এনেছি, একটি রেড ক্যামেরাও আছে। এরই মধ্যে দুটি অ্যালেক্সা ক্যামেরা আনার জন্য চেষ্টা করছি। ১৭ ইঞ্চি মনিটর আছে দেখার জন্য। প্রয়োজনীয় সব ধরনের লেন্স, জুমলেন্স, একাধিক ফিলটার, আধুনিক ট্রাইপড, সঙ্গে আছে ম্যাকের কম্পিউটার ডাটা ট্রান্সফারের জন্য। ক্যামেরায় ওয়াইফাই আছে, যাতে রিমোট দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।’
তপন কুমার আরো যোগ করেন, ‘মূল্যের বেলায় আমাদের এখানে বাইরের থেকে অনেক কম। প্রসেসিং ইউনিট আাছে তিনটি। ৪কে, ২কে, ১কে, এইচডি একটি থেকে আরেকটি কনভার্ড করা যাবে।’
কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বিএফডিসিতে আরো রয়েছে দূরনিয়ন্ত্রণযোগ্য ৪০ ফুটের সর্বাধুনিক দুটি জিমিজিব, ২০ ফুট ট্রলি, যা ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যায়, এসি-ডিসি দুটোই আছে, যে কারণে পাহাড়ি বা দুর্গম অঞ্চলেও এগুলো ব্যবহার করা যাবে।
অনেক প্রোডাকশন হাউস তো এসব যন্ত্রপাতি অনেক আগেই নিয়ে এসেছে, বিএফডিসির এত দেরি হলো কেন—জানতে চাইলে তপন কুমার বলেন, ‘আমরা সরকারিভাবে এসব জিনিস কিনেছি, আমাদের নিয়মের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যে কারণে এত সময় লেগেছে। তবে যেহেতু আমরা সেটআপ করে ফেলেছি, এখন থেকে প্রতিনিয়ত আপগ্রেড হবে।’
বিএফডিসিতে ভবিষ্যতে কেউ যদি ছবি তৈরির জন্য প্রবেশ করেন তো তিনি ছবির প্রদর্শন পর্যন্ত করে বেরিয়ে আসতে পারবেন, এমনটাই জানালেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।