গরমে নিন ত্বকের যত্ন
গ্রীষ্মকালে রোদের প্রখর তাপ ও অতিরিক্ত গরমের কারণে ত্বকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। তবে একটু সতর্ক হলে গরম থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নিই গরমে সাধারণত ত্বকে কী ধরনের সমস্যা হয় এবং এর প্রতিরোধের উপায়।
হিট র্যাশ
দীর্ঘ সময় ধরে ত্বক চড়া রোদে থাকলে বা গরমের মধ্যে থাকলে হিট র্যাশ হয়। এতে ত্বকে ছোট ছোট লাল রঙের র্যাশ হয়। পাশাপাশি চুলকানি হয়। অনেক সময় জ্বালাপোড়া করে। শিশুদের ক্ষেত্রে হিট র্যাশ হলে বুঝতে হবে সে অতিরিক্ত গরমের মধ্যে আছে। খুব জটিল হয়ে গেলে ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তখন সমস্যাটি জীবনঘাতী হয়ে দাঁড়ায়।
প্রতিরোধ
হিট র্যাশ প্রতিরোধে ঠান্ডা জায়গায় থাকতে হবে। ফ্যানের নিচে থাকতে হবে। ভারী কাপড় পড়া যাবে না, গা মুছে রাখতে হবে। সুতির পোশাক পরতে হবে। রোদে বের হলে ছাতা ব্যবহার করতে হবে। সান ব্লক ব্যবহার করতে হবে। র্যাশ যেসব জায়গায় উঠেছে সেখানে বরফ ঘষতে হবে। হিট র্যাশ হলে ব্যক্তিকে এসি রুমে রাখা ভালো। পানি দিয়ে বারবার গা মুছে দিতে হবে। প্রচুর পানি পান করাতে হবে।
সান বার্ন
কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিনই ঘরের বাইরে বের হই আমরা। সারা দিনের ধুলো ও রোদের তাপে ত্বকের মধ্যে পোড়াভাব তৈরি হয়। রোদের তীব্র অতিবেগুনি রশ্মির কারণে ত্বক পুড়ে যায়। ত্বকের রং ধীরে ধীরে কালচে হতে থাকে।
প্রতিরোধ
রোদে বাইরে বের হওয়ার সময় সানব্লক বা সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করবেন। বাইরে যাওয়ার অন্তত আধা ঘণ্টা আগে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম লাগাতে হবে। কয়েক ঘণ্টা পর এর কার্যকারিতা কমে যায়, তাই তিন ঘণ্টা পর আবার সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। চোখে সান গ্লাস ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব হলে ফুলহাতা সুতির পোশাক পরতে হবে। ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
ঘামাচি
যাদের প্রচুর ঘাম হয় তাদের এই সমস্যা হয়। এর ফলে লাল লাল ফুসকুড়ির মতো ওঠে, একে ঘামাচি বলে। এই সমস্যায় চুলকানি হয়, কখনো কখনো জ্বালাপোড়া করে।
প্রতিরোধ
গরমে ঠান্ডা জায়গায় থাকতে হবে। ঘামাচি প্রতিরোধক পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত গোসল করতে হবে। যদি সমস্যা জটিল আকার ধারণ করে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ফাঙ্গাল ইনফেকশন
অনেক সময় গরমে অতিরিক্ত ঘেমে শরীরে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। সাধারণত শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে এ ধরনের সমস্যা হয়। যেমন : কুচকি, বোগল এসব জায়গায় এই সমস্যা হয়। এই সমস্যায় শরীরে চুলকানি হয়, আশের মতো ওঠে। যেসব দেশে গরম বেশি, সেখানে এই সমস্যা বেশি হয়।
প্রতিরোধ
সমস্যা থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন গোসল করতে হবে, পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। পোশাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।
ডা. মোশারফ আহমেদ খসরু, লেজার সেন্টার বিভাগ, অ্যাপোলো হাসপাতাল