শরীরের বাড়তি ওজন কমানোর সাত উপায়
নিজের শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝড়িয়ে, স্বাস্থ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন করতে চান? সুঠাম-সুগঠিত ঝরঝরে একটি দেহ পেতে চান? তাহলে আপনার একমাত্র সমাধান হতে পারে মেটাবোলিজম ঠিক করা। শরীরে রাসায়নিক ও শারীরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলোকে মেটাবোলিজম বলে। প্রশ্ন উঠতে পারে মেটাবোলিজমের সঙ্গে সুঠাম সুগঠিত দেহের কী সম্পর্ক? শরীরে যদি বাড়তি মেদ বা চর্বি জমার কোনো সুযোগ না থাকে, এমনভাবে যদি নিজের শারীরিক অভ্যাসগুলো গড়ে নেওয়া যায় তাহলে দ্রুতই বাড়তি ওজন কমানো সম্ভব। ব্রাইটসাইট ওয়েবসাইটের সৌজন্যে চলুন দেখে নিই কীভাবে সেটি সম্ভব।
১. অধিক পরিমাণে পানি পান করুন
যদি আপনি শরীরের জন্য যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করেন তাহলে আপনার শরীর কম ক্যালরি খরচ করবে। এতে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এতে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে পাকস্থলীকে আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। পাকস্থলীর পরিশ্রম কমাতে এবং শরীরের ক্যালরি পোড়াতে আপনার প্রচুর পরিমাণে পানি ও গ্রিন টি পান করা উচিত।
২. প্রাকৃতিক থাকুন
আপনার শরীরের জন্য পণ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার পরিচয় দিন। জেনেটিক্যালি মডিফাইড অর্গানিজম (জিএমও) বা জৈবিকভাবে পরিবর্তিত প্রাণী বা উদ্ভিদকে খাদ্য হিসেবে না বলুন। এ ছাড়া বাজারে পাওয়া বিভিন্ন আন্টিবায়োটিক ও গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এরা আপনার শরীরকে মুটিয়ে দেবে।
৩. ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন
ইংরেজিতে একটি কথা আছে ‘আর্লি টু বেড আর্লি টু রাইজ, মেকস অ্যা ম্যান হেলদি ওয়েলদি অ্যান্ড ওয়াইজ’ অর্থাৎ সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা এবং রাতে দ্রুত ঘুমাতে যাওয়া আপনাকে স্বাস্থ্যবান, সমৃদ্ধশালী ও জ্ঞানী করে তুলবে। কথাটা একেবারে ভুল নয়। সূর্যের রশ্মি আপনার শরীরের মেটাবোলিজম এবং শক্তি ব্যয়ের ওপর প্রভাব ফেলে। ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আপনার শরীরের সেসব জৈবিক প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে যেগুলো সরাসরি দিবা-রাত্রির চক্রের ওপর নির্ভর করে।
৪. পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করুন
আপনার ডায়েট বা খাদ্য পরিকল্পনার তালিকায় দুগ্ধজাত খাদ্যদ্রব্য রাখার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি শরীরের অপ্রয়োজনীয় ফ্যাট দূর হবে। ফলে আপনার পেশি হবে সুগঠিত। খাদ্যে আয়রনের মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখুন। এতে আপনার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন সরবারাহ করতে পারবে। এ ছাড়া থাইরয়েড গ্রন্থির (গলার বিশেষ এক গ্রন্থি) কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে খাদ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করতে হবে।
৫. শরীরচর্চার পরিমাণ বৃদ্ধি করুন
যেকোনো ধরনের শারীরিক ব্যায়াম মেটাবোলিজমকে উন্নত করে। আপনার পেশির সবসময় শক্তির প্রয়োজন। তাই এর জন্য ব্যায়ামাগারে যোগ দিতে পারেন অথবা হাঁটার পরিমাণ বাড়াতে পারেন। এ ছাড়া নাচও কিন্তু এক ধরনের শারীরিক কসরত। তাই শরীরের ওজন কমাতে নাচটাও শিখে নিতে পারেন।
৬. স্বাস্থ্যকর ডায়েট বা খাদ্য পরিকল্পনা তৈরি করুন
যদি আপনি হঠাৎ করে খাওয়া-দাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেন তাহলে আপনি যা খাবেন তা শরীর দ্রুত জমা করা শুরু করবে। অস্বাস্থ্যকর এবং ঘনঘন স্ন্যাকস জাতীয় খাবার খেলে, যেমন ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, বার্গার, পিৎজা, হট ডগ ইত্যাদি দেহের অতিরিক্ত চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। অন্তত দুইবেলা শাকসবজি এবং একবেলা আমিষ খান। তবে একেবারেই শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়া বাদ দেবেন না। কারণ শর্করা জাতীয় খাবার কম খেলে মস্তিস্কের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
৭. মানসিক চাপকে না বলুন
বেশি মাত্রায় যেমন শারীরিক কাজ করা উচিত নয়, তেমিন মানসিক চাপ হয় এমন কাজের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার। মানসিক চাপ কমলে আপনার শরীরের মেটাবোলিজম ভালো হবে। তাই সব ধরনের ধকলকে দূরে সরিয়ে শরীরকে আরাম দেওয়া এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে শারীরিক ও মানসিক চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।