ভালো থাকতে চাই ভালো ভাবনা
একটি মাত্র ভয়ানক বা দুঃখজনক ঘটনা আমাদের জীবনকে বদলে দিতে পারে। এই ঘটনাগুলো নেতিবাচক চিন্তার দিকে মন টেনে নিয়ে যায়- যা একই সঙ্গে মন আর শরীরের জন্য ক্ষতিকর। নিজের মাঝে ইতিবাচক চিন্তার প্রবণতা গড়ে তুললে এই অনুভূতিগুলোর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। হাফিংটনপোস্ট প্রকাশ করেছে এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন।
লাভ অ্যান্ড সারভাইভাল নামের একটি বইয়ে লেখক ড. ডিন অরনিশ বলেন, বিরূপ আচরণ, শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব বা নেতিবাদী চিন্তা হৃদরোগের বড় কারণ। রীতিমতো ৪৫টি গবেষণা পর্যবেক্ষণ করেই এমন কথা বলা!
কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়া, উচ্চ রক্তচাপের মতো এই নেতবাচক মানসিকতাও আপনার হার্টের অবস্থা একদম নাজুক করে তুলতে পারে।
ইতিবাচক চিন্তা কেবল মানসিক স্বাস্থ্যই নয়, শরীর সুস্থ রাখার জন্যও কার্যকর এক নিয়ামক।
গবেষক ড. বারবারা ফ্রেড্রিকসন তাঁর বই ‘পজিটিভিটি’তে বলেছেন, ইতিবাচক চিন্তার ভেতর এক ধরনের আশাবাদী বিষয় রয়েছে। এটি ইতিবাচক আবেগ তৈরির পাশাপাশি হার্টকে ভালো রাখে, শরীর হালকা রাখে। এটি ব্যক্তিত্ব, চরিত্র, সম্পর্ক, যোগাযোগ এবং পরিবেশের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব তৈরিতে সহায়ক।
কগনিশন অ্যান্ড ইমোশন নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধে ফ্রেডরিকসন উল্লেখ করেন, ইতিবাচক ভাবনা আচরণের মধ্যে প্রভাব ফেলে। ইতিবাচক অনুভূতি মানুষকে খুশি রাখে এবং তাদের ক্ষমাশীল করে তোলে।
নেতিবাচক আবেগ এই বিষয়গুলোকে কমিয়ে দেয়। নেতিবাচক চিন্তা বা নেতিবাদী আচরণ রাগ, উদ্বেগ - এগুলো তৈরি করে। যখন নেতিবাচক চিন্তার চাপ তৈরি হয় তখন এর ফলে দেহের কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতি প্রভাবিত হয়।
এটি হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। রোগ প্রতিরোধক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে। নেতিবাচক চিন্তা বা আবেগ করোনারি আর্টারি রোগ তৈরি করে।
মোটিভেশন অ্যান্ড ইমোশন জার্নালের আরেকটি প্রবন্ধে বলা হয়, ইতিবাচক আবেগ নেতিবাচকতার প্রভাব থেকে কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতিকে আগের অবস্থায় বা সুস্থ অবস্থায় নিয়ে যায়। গবেষণাটিতে অংশগ্রহণকারীদের দুঃখ বা নেতিবাচকতা এবং খুশি ও ইতিবাচকতার বিষয়ে কয়েকটি ছবি দেখানো হয়। ফলাফলে দেখা যায়, যখন তারা ইতিবাচক খুশির কোনো ছবি দেখে, তখন এমন জিনিস উৎপন্ন হয় যা কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
দুঃখের ছবি কার্ডিওভাসকুলার পদ্ধতিকে দুর্বল করে দেয়।
গবেষকদের কথা হলো, আমরা নেতিবাচক ভাবনা বা আবেগগুলোকে এড়িয়ে যেতে পারি না। তবে একটু একটু ইতিবাচক ভাবনা আমাদের জীবনে ধীরে ধীরে ইতিবাচক মানসিকতাকে বাড়িয়ে তোলে। তাই হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে ইতিবাচক চিন্তা করার পরামর্শ গবেষকদের।