ভ্রমণে সুস্থ থাকতে যা করবেন
সামনে কোরবানির ঈদ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে গ্রামের বাড়িতে। তবে ভ্রমণে একটু অসতর্কতা আপনার ঈদের আনন্দকে পণ্ড করে দিতে পারে নিমেষেই। তাই ভ্রমণে চাই বাড়তি সতর্কতা।
ভ্রমণের সময় করণীয় বিষয়ে কথা হয় সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাকিল মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভ্রমণের ক্ষেত্রে পূর্বপ্রস্তুতি দরকার। ভ্রমণে খাবার-দাবারের বিষয়ে আগে থেকে পরিকল্পনা করে ফেলুন। ভ্রমণের সময় বিশুদ্ধ পানি সঙ্গে নিন, ওরস্যালাইন নিন।’
প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখুন
বমি, মাথাব্যথার, গ্যাসট্রিক, পেটব্যথার ওষুধ সঙ্গে রাখতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু জিনিস নিতে হবে। যেমন : স্যাভলন, ডেটল, ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ ইত্যাদি।’
ভ্রমণে বিভিন্ন জরুরি অবস্থা হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাই জরুরি ওষুধগুলো সব সময় সঙ্গে রাখতে হবে। জরুরি প্রেসক্রিপশন, ডাক্তারের নম্বর সঙ্গে রাখতে হবে। ভ্রমণে অনেক সময় দুর্ঘটনা হয়। তাই দুটো চশমা সঙ্গে রাখুন।’
শিশুকে জানালার পাশে বসাবেন না
ভ্রমণের সময় শিশু যেন জানালার পাশে না বসে, সে বিষয়ে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জানালার পাশে বসলে বাতাসের ঝাপটায় ঠান্ডা-কাশি লাগতে পারে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ছাড়া ভ্রমণে সব সময় বাচ্চাদের বাসায় বানানো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।’
‘যেসব বাচ্চা বমি করতে চায়, তাদের ভ্রমণের সময় একটু ঘুম পাড়ানো যেতে পারে। এতে ভ্রমণ আরামদায়ক হয়।’
ভ্রমণের আগে বমির ওষুধ খেয়ে নিন
যাদের ভ্রমণের সময় বমির সমস্যা হয়, তাদের ওষুধ খেয়ে নিতে হবে জানিয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘ভ্রমণের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে বমির ওষুধ খেয়ে নিতে হবে। আর বমির অভ্যাস থাকলে সঙ্গে পলিথিন নিতে হবে।’
হাত-পা নাড়াচাড়া করুন
দীর্ঘ ভ্রমণে অনেক সময় বসে থাকলে বয়স্কদের হাত বা পা ব্যথা হয় জানিয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘তাই আধা ঘণ্টা পর পর একটু দাঁড়াতে হবে। হাত বা নাড়াতে হবে।’
তরলজাতীয় খাবার খান
দীর্ঘ ভ্রমণে শরীরে পানিশূন্যতা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পানিশূন্যতা থাকলে মাথাব্যথা, পা ব্যথা, খাবারে অরুচি, বমি বমি ভাব ইত্যাদি সমস্যা হয়। এটি প্রতিরোধে ভ্রমণে সব সময় যেসব খাবারে পানি রয়েছে, সেগুলো খেতে হবে। যেমন : ওরস্যালাইন, শসা, লেবুর শরবত ইত্যাদি। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এটি যেন বাইরের বা হকারের শসা না হয়। হকারের শসা খেলে ফুড পয়জনিং হতে পারে। কারণ, হকাররা অনেক আগে শসা কেটে রাখে। তাই শসা অবশ্যই বাসা থেকে নিতে হবে।’
‘আর বাইরের লেবুর শরবত, আখের শরবত এগুলো খাওয়া যাবে না। এগুলো থেকে ফুড পয়জনিং হতে পারে। এতে আপনার ঈদ আনন্দ নষ্ট হতে পারে।’
ভ্রমণের ক্লান্তি দূর করতে তরল ও বাসায় তৈরি খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।