প্যালিয়াটিভ কেয়ার বাসায় রেখে করা সম্ভব?
নিরাময় অযোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে জীবনের অন্তিম সময়ে রোগীর পরিচর্যা হলো প্যালিয়াটিভ কেয়ার। প্রয়োজনীয় সুযোগ থাকলে ঘরেও এ সেবা দেওয়া সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৩৮তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মো. নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালিয়েটিভ মেডিসিন বিভাগে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : সব রোগীর ক্ষেত্রে কী প্যালিয়াটিভ কেয়ারে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন? না কি বাসায় রেখে সেবা দেওয়া যায়?
উত্তর : পৃথিবীর যে তিনটি দেশে প্যালিয়াটিভ কেয়ার সবচেয়ে বেশি সুনাম অর্জন করেছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে ভারতের দক্ষিণ কেরালা। দুই নম্বর হচ্ছে উগান্ডা, তিন নম্বর হলো স্পেন। স্পেনের দুটো শহর। সেখানে না কি শতকরা ৯০ ভাগ নিরাময়অযোগ্য মানুষ এই ধরনের পরিচর্যার আওতায় এসেছে। তাদের কিন্তু একবারেই হাসপাতালমুখী চিকিৎসা ব্যবস্থা নয়। তাদের হলো হোম কেয়ার সিস্টেম। গৃহমুখী চিকিৎসা।
আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন, আপনি কোথায় মারা যেতে চান? আমার প্রথম উত্তর হবে আমি মারা যেতে চাই না। আমি বেঁচে থাকতে চাই। আমি সারা জীবন বেঁচে থাকতে চাই। তবে এও তো সত্য আমি তো মরবই। তখন যদি প্রশ্ন আসে তখন কোথায় মারা যেতে চাই। তাহলে বলব, মরতেই যদি হয়, বাসায় মারা যেতে চাই। তবে আসলে কি আমার মৃত্যু বাসায় হবে। না বোধ হয়। কারণ আমার পরিবার কী করবে বুঝতে না পেরে আর্থসামাজিক অবস্থা অনুযায়ী কোনো একটি হাসপাতালে নিয়ে যাবে। হাসপাতালের চিকিৎসক বলবেন আমার তো আর কিছু করার নেই। কিন্তু আসলে কিছু না কিছু করার রয়েছে, কিছু না কিছু করার ছিল। আমি আমার পরিবারের ভেতরে ভালোবাসার মাঝখানে, উষ্মতার ভেতর দিয়ে বিদায় নিতে চেয়েছি। আমি আমার সন্তানের মুখ দেখে বিদায় নিতে চেয়েছি। অতএব বাসায় যদি সেবার কোনো একটি ব্যবস্থা থাকে, তাহলে ভালো। পরিবার কেন হাসপাতালে নিয়ে যায়? কারণ, পরিবার জানে না কী করতে হবে। তবে যদি এমন হয় যে সংকটের সময় সেবাটি বাসায় আসছে, রোগী যখন চিকিৎসা সেবার কাছে যেতে পারছেন না, চিকিৎসা সেবা তখন রোগীর কাছে আসছে, তাহলে কেমন হয়? তাহলে অনেক ভালো হয়। হোম কেয়ার সার্ভিস কোনো অলীক কিছু নয়। আমি আপনাকে আনন্দের সঙ্গে বলি খুব ছোট পরিসরে হলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোম কেয়ার সার্ভিস চালু রয়েছে। কেবল শহরে চালু নেই। করাইল বস্তির ভেতরে ছোট একটি প্রোগ্রাম চলে হোম কেয়ার সেন্টারের।