শরীরে ৯৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা কি জ্বর?
সাধারণত ১০০ বা একশর ওপরে তাপমাত্রাকে জ্বর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় শরীরে দুর্বলতা ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে অনেক সময় শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকলেও শরীর ব্যথা, ম্যাজ ম্যাজ ভাব, ক্লান্তভাব হতে পারে। তবে এই তাপমাত্রাকে কি জ্বর হিসেবে বিবেচনা করা যাবে, নাকি স্বাভাবিক বলা যাবে?
এ বিষয়ে কথা হয় সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাকিল মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইটকে সাধারণত জ্বর বলা হয় না। একে স্বাভাবিক হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তবে এটি নির্ভর করবে বয়স, শারীরিক অবস্থা, দীর্ঘমেয়াদে কোনো রোগ রয়েছে কি না সেগুলোর ওপর।
পরিবেশের তাপমাত্রার ওঠানামা করলে অনেক সময় শরীরের বায়োকেমিক্যাল পরিবর্তন হয়। সেই ক্ষেত্রে অনেকের শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অবস্থায় শরীর ব্যথা, ম্যাজ ম্যাজ, অসুস্থ অনুভূতি, ক্লান্তভাব, শরীর বেশি দুর্বল মনে হওয়ার সমস্যা হতে পারে। তবে সাধারণত একে জ্বর হিসেবে ধরা হয় না।’
জ্বর কখন হয়, এ বিষয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘প্রোস্টারগ্ল্যানডিং নামক লোকাল হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে গেলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। প্রোস্টারগ্ল্যানডিং হরমোন শরীরের সব কোষের মেমব্রেনেই থাকে। এতে শরীরে জ্বর জ্বর অনুভূতি হতে পারে। সাধারণত ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।’
তবে যাদের ক্রনিক (দীর্ঘমেয়াদি) রোগ তাদের ক্ষেত্রে ৯৯ জ্বর হলে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ মতে ওষুধ খাওয়া উচিত। দীর্ঘমেয়াদি রোগ ক্ষেত্রে রয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে কিডনি রোগ, ফুসফুসের সংক্রমণ, দীর্ঘমেয়াদি লিভার ডিজিজ, বাত ব্যথা, ক্যানসার ইত্যাদি।
তবে শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি হলে সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এটি জ্বর না হলেও কিছুক্ষণ পরপর শরীরের তাপ মেপে দেখতে হবে। সে ক্ষেত্রে এক ঘণ্টা পরপর তাপ মাপা যেতে পারে।
এ সময় করণীয় বিষয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘৯৯ জ্বর নয়। তবে এটি যেন না বেড়ে যায় সে জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একটু বিশ্রাম নিতে হবে। শরীর বেশি খারাপ লাগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। বেশি করে তরল খেতে হবে। লেবুর শরবত খেতে পান করা যেতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন জাম্বুরা, আমড়া, আমলকী, লেবু, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন দেশীয় ফল খেতে হবে।
সাধারণত এ ধরনের অবস্থায় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই জানিয়ে ডা. শাকিল বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা ৯৯ ডিগ্রি হলে বিশ্রাম নিলে এবং সঠিক খাবার খেলে ঠিক হয়ে যায়। তাই এ অবস্থায় বিশ্রাম নেওয়া এবং সঠিক খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।