গর্ভধারণের আগে যা করবেন
গর্ভধারণের আগে দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কিছু নিয়ম মানা জরুরি। গর্ভধারণে দৈনন্দিন জীবনের কিছু নিয়মের বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৫২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. সায়লা পারভীন। বর্তমানে তিনি মহাখালী ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : গর্ভধারণের আগে দৈনন্দিন জীবনযাপনে কোনো পরিবর্তন আনার জন্য কোনো উপদেশ দিয়ে থাকেন কি?
উত্তর : যেমন সে যদি ঘরে বসে থাকে, আমরা বলব, একটু ব্যায়াম করেন। এতে ফিটনেস বাড়বে। নিয়মিত সে এক ঘণ্টা হাঁটবে। ওজন যদি বেশি থাকে, তাকে কমাতে হবে।
আর যদি অ্যানিমিয়া (রক্তস্বল্পতা) থাকে, তাহলে তাকে আয়রন সাপ্লিমেন্ট দিই। যেসব খাবারে আয়রন রয়েছে, সেগুলো খেতে বলি। এতে আরো যেগুলো তার অসুখ রয়েছে, সেগুলো তার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। অনেক সময় দেখা যায় অসুখ নেই, তবে পরিবারে যদি ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে জেসটেশনাল ডায়াবেটিস হওয়ার অনেক আশঙ্কা থাকে। তাদের আমরা মিষ্টি জিনিস একটু কম খেতে বলি। সে ফলমূল খাবে, শাকসবজি প্রচুর খাবে। তবে মিষ্টিটা এড়িয়ে যাবে। যেহেতু পারিবারিক ইতিহাস আছে, তার কিন্তু জেসটেশনাল ডায়াবেটিস বা গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হতে পারে।
আরো কিছু কনজেনিটাল রোগ রয়েছে। যেমন হিমোফেলিয়া থাকলে মা ক্যারিয়ার থাকে। তবে সেটি অবশ্য সে রকম বোঝা যায় না। আর যদি থ্যালাসেমিয়া দুজনেই ক্যারিয়ার হয়, তাহলে তাদের আমরা বলি বাচ্চা না নিলেই ভালো হয়। কারণ, দুজনেই যদি থাকে, তাহলে দেখা যায় বাচ্চার মেজর থ্যালাসেমিয়া হবে। আর নিলেও বোনমেরু ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার কিছু সুযোগ থাকে। এরপর আরো কিছু কিছু বোনমেরু রোগ রয়েছে, এগুলোতে আমরা বলি যে না নেওয়াই ভালো।
গর্ভধারণের আগে পরামর্শের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুহার আমরা অনেক কমিয়ে দিতে পারি। অস্বাভাবিক বাচ্চার হারও আমরা অনেক কমিয়ে দিতে পারি। পরিপূর্ণ সুস্থ থাকতে পারে। আর পোস্ট পার্টাম যে সমস্যাগুলো, সেগুলো আমরা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে পারি। এমনিতেই আমাদের দেশে শিশু মৃত্যুর হার এবং মাতৃমৃত্যুর হার এখনো অনেক বেশি হয়। সুতরাং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি।
প্রশ্ন : এ ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো ভূমিকা রয়েছে বলে কি আপনি মনে করেন?
উত্তর : কাউন্সেলিং তো স্বামীকেও করতে হবে। তার শাশুড়ি বা অন্যান্য যাঁরা রয়েছেন, তাঁদেরও করতে হবে। এ দেশে অনেকেরই যৌথ পরিবার থাকে, শাশুড়ি ও ননদদেরও এনে যে মায়ের যত্ন নিলে ভবিষতে তাঁদেরই একটি শিশু সুস্থ হবে, স্বাস্থ্যকর হবে। এতে মায়ের স্বাস্থ্যও ভালো হবে। মাও বাচ্চাকে সুস্থভাবে লালনপালন করতে পারবেন। স্বামীকেও কাউন্সেলিংয়ের সময় অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে।