বাংলাদেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের বর্তমান পরিস্থিতি কী?
বাংলাদেশে এখন কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন বা প্রতিস্থাপন হচ্ছে। এর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৮৪৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. হারুন অর রশিদ। বর্তমানে তিনি কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটে কিডনি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে এখন কী পরিস্থিতি এবং অন্য কোনো বিষয় রয়েছে কি না?
উত্তর : অবশ্যই অন্য বিষয় রয়েছে। এখন যেটা আমরা জানি, যদি আপনার রক্তের গ্রুপ মিল না থাকে, সে ক্ষেত্রে এখন আপনি আধুনিক প্রযুক্তিতে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে পারেন। ধরেন, বাবা-মা, ভাইবোনের সঙ্গে যে কিডনিদাতা, তার রক্তের গ্রুপ মিল নেই, সে ক্ষেত্রে আমরা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে পারি। এতে ডোনারের বিষয়টি বেড়ে গেল। আর দুই নম্বর হলো, সচেতনতার বিষয় রয়েছে। বেশিরভাগ রোগীর কাছের আত্মীয়স্বজন থাকা সত্ত্বেও কিডনি দিতে আগ্রহী হয় না। তিনি মনে করেন, আমার একটা কিডনি চলে গেল, আমি বোধ হয় এরপর অসুস্থ হয়ে পড়লাম।
একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আসলে কোনো কিডনি রোগই একটি কিডনিতে হয় না। আপনি নেফ্রাইটিস বলেন, এখানেও দুটো কিডনি একত্রে আক্রমণ করবে। ডায়াবেটিস বলেন, দুটো কিডনি একত্রে আক্রান্ত হবে। উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে বলেন, দুটো কিডনি একসঙ্গে ফেইলিউর হবে। সুতরাং আপনি একটা কিডনি থাকলে যদি ১০০ বছর বাঁচেন, দুটো কিডনি থাকলেও আপনি ১০০ বছর বাঁচবেন। সুতরাং কিডনি দিলে কোনো ক্ষতি হবে না।
যদি আত্মীয়র কিডনি না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে আমরা মরণোত্তর কিডনি দান করতে পারি। লাইফ সাপোর্টে যারা রয়েছে, তাদের আমরা মরণোত্তর বলছি। লাইফ সাপোর্টে থাকার পর যখন তার ব্রেইন ডেথ হবে, তখন আমরা বলি ডেথ। তখনই বলি ক্যাডাভ্যারিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট। এটি তখনই দেওয়া যাবে, যখন সে আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করবে। রাস্তায় মৃত্যুবরণ করলে বা ঘরে মৃত্যুবরণ করলে এটি হবে না। এটা জানা দরকার। এর থেকে আমরা দুটো কিডনি, একটি লিভার, একটি হার্ট, চোখ দিতে পারি। এ রকম অরগান (অঙ্গ) ফেইলিউর রোগীদের বাঁচিয়ে তুলতে পারি। কর্নিয়া দিয়ে অন্ধত্ব নিবারণ করতে পারি।
আসলে আমাদের লাইফ রিলেটেড কিডনি দেওয়ার চেয়ে বেশি মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন মরণোত্তর কিডনিদানে।