কলা খেলে ঠান্ডা লাগে না
একটি দৃশ্য : পাঁচ বছরের একটি ছেলে। কলা তার কাছে খুব প্রিয়। অথচ মা তাকে কলা খেতে দিচ্ছে না। কারণ, কদিন ধরেই তার একআধটু সর্দি রয়েছে। মায়ের ধারণা, এখন কলা খেলে ঠান্ডা লাগবে, সর্দি বাড়বে, কাশ হবে, এমনকি টনসিলের সমস্যাও হতে পারে।
আরেকটি দৃশ্য : ৫০ বছরের একজন বৃদ্ধ। একআধটু খুসখুসে কাশি রয়েছে। কলা খেতে চাইলেই পরিবারের সবাই বারণ করেন। তাঁদের কথা হচ্ছে, কলা খেলে ঠান্ডা লাগবে, কাশি হবে।
কলা নিয়ে এ রকম দৃশ্য প্রতিদিনের জীবনে প্রায়ই দেখা যায়। প্রচলিত কুসংস্কার হলো, কলা খেলে ঠান্ডা লাগবে, কলা নাকি শ্লেষ্মাবর্ধক, কলা খেলে নাকি টনসিল বেড়ে যায়। বলা বাহুল্য, এ ধারণাটি ভুল। কোনো খাদ্যবস্তু ঠান্ডা অবস্থায় খেলে তা থেকে ঠান্ডা লাগতেই পারে। এ জন্য খাদ্যবস্তুটি দায়ী নয়। দায়ী তার ভেতরে থাকা কম তাপমাত্রা। শুধু কলা কেন; ভাত, ডাল, জল, দুধসহ যেকোনো জিনিসই যদি ফ্রিজ থেকে বের করে তক্ষুনি খাওয়া হয়, তাহলে তো হঠাৎ করে তাপমাত্রার পরিবর্তনে ঠান্ডা লাগতেই পারে। কিন্তু ঠান্ডায় রাখা নেই এমন কলা খেলে ঠান্ডা লাগবে কেন? ছয় মাসের শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণ যে কেউই কলা খেতে পারেন। কারণ, কলা একটি সহজপাচ্য, সস্তা অথচ পুষ্টিকর ফল। সব কলার পুষ্টিমূল্যই প্রায় সমান। ১০০ গ্রাম কলা খেকে শক্তি মিলে ১৫৩ ক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৩৫ ভাগ, লোহা আধা মিলিগ্রাম। এ ছাড়া রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম, কপার ও আয়োডিন। ভিটামিন এ, সি ও বি গ্রুপের সব ভিটামিনই কলায় থাকে। এ ছাড়া পেকটিন ও ফাইভ এইচটি নামে দুটো রাসায়নিক পদার্থ কলায় থাকে, সেগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।