ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধে করণীয়
আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিবছর এই দিনে বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন করা হয়।
প্রায় প্রতি ঘরেই ডায়াবেটিসের রোগী দেখা যায়। আমাদের দেশে প্রায় দেড় কোটি লোক ডায়াবেটিস নিয়ে জীবনযাপন করছেন। আর পৃথিবীতে এই রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটির বেশি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ২০৩০ সাল নাগাদ সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ৪০ কোটিতে দাঁড়াবে।
ডায়াবেটিস ও ত্বকের সমস্যা
ডায়াবেটিস রোগীদের ত্বকে কেন সমস্যা হয়? আমরা খাবারের মাধ্যমে যে সুগার নিই, এটি রক্তে চলে যায়। আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামক এক ধরনের হরমোন থাকে। এটি সুগারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে, না হলে সেটি জমে থাকে। তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, তাদের কোনো কারণে ইনসুলিন উৎপাদন কম হয়। তখন এই কোষ সুগারকে কাজে লাগাতে পারে না। তখন অস্বাভাবিকভাবে জমতে থাকে। আর একটি একটি করে অঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে। আমাদের ত্বকে যে রক্তনালিগুলো থাকে, এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেভাবে ত্বক প্রভাবিত হয়।
ডায়াবেটিস হলে প্রথমে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা হয়। রক্তে উচ্চমাত্রায় সুগার ত্বককে পানিশূন্য করে। কারণ, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। এটি আমাদের কোলাজেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কোলাজেন যেহেতু কম তৈরি হচ্ছে, তাই নিরাময় কম হয়। এতে শুষ্কতা বেশি দেখা দেয়। ঘন ঘন প্রস্রাব ও ঘাম হওয়ার কারণে শরীর শুষ্ক হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে ত্বকের ওপর।
ত্বক শুষ্ক হলে অনেক রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। চুলকানি ও ক্র্যাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। শুষ্কতা প্রতিরোধ করতে পারলে পরবর্তীকালে সংক্রমণ, ক্র্যাক—এগুলো থেকে মুক্ত থাকা যায়।
শুষ্কতা প্রতিরোধে করণীয়
শুষ্কতা প্রতিরোধের প্রথমেই একটি মাইল্ড সাবান দিয়ে খুব অল্প সময়ের জন্য গোসল করতে হবে। সাবানটা অনেক মাইল্ড হতে হবে। আর গোসলের পরপরই ভালো ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বককে ময়েশ্চার করতে হবে। ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ময়েশ্চারাইজারটি হাইপো-অ্যালার্জিক হতে হবে। কোনো রাসায়নিক পদার্থ বা প্রিজারভেটিভ থাকা যাবে না। ডাই মুক্ত ও গন্ধমুক্ত হতে হবে।
এভাবে মাইল্ড সাবান দিয়ে গোসল করলে এবং নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের শুষ্কতা থেকে অনেকটাই রেহাই পাওয়া যাবে।
লেখক : ডার্মাটোলজিস্ট, শিওর সেল মেডিকেল।