চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন, আপনি কি প্রস্তুত?

রোগমুক্তির জন্য চিকিৎসকের কাছে আমাদের যেতেই হয়। তবে হয়তো সাক্ষাতের সময় ঠিক না রাখা, কী বলবেন তার তালিকা ঠিক না করা-এমন অনেক ভুলই আমরা চিকিৎসককে দেখানোর সময় করি। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ গ্রেডস জানিয়েছে চিকিৎসককে দেখাতে গিয়ে সাধারণত যেসব ভুল আমরা করি, সেগুলোর কথা।
১. প্রস্তুতি নিয়ে যাই না
অধিকাংশ চিকিৎসকই সাধারণত পাঁচ থেকে ১৮ মিনিটের মধ্যে সাক্ষাতের সময় শেষ করেন। সময়টি খুব বেশি নয়। তাই চিকিৎসককে কী বলবেন সেটি আগে থেকে গুছিয়ে গেলে সময়টা ঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়। তবে অনেকেই এই কাজটি করেন না। এতে দেখা যায়, কোনো জরুরি কথা হয়তো বাদ পড়ে যায়। তাই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে তাকে কী কী সমস্যার কথা বলবেন, সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করুন। পাশাপাশি ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্রগুলো সঙ্গে রাখুন।
২. সঠিক সময়ে পৌঁছাই না
চিকিৎসকের জন্য সিরিয়াল ধরে বসে থাকা সত্যিই খুব বিরক্তিকর। এর জন্য অনেকে হয়তো চিকিৎসকের কাছে একটু দেরি করেই উপস্থিত হোন। তবে এই বেশি দেরি করে ফেললে কিন্তু সিরিয়াল চলে যেতে পারে, তখন আরো ঝক্কির মধ্যে পড়তে পারেন আপনি। তাই সঠিক সময়ে চিকিৎসকের চেম্বারে পৌঁছান।
৩. সঙ্গে কাউকে নিয়ে না যাওয়া
বিভিন্ন কারণে অনেকেই চিকিৎসকের কাছে একা যান। এটি না করাই ভালো। পরিবারের সদস্য বা কোনো বন্ধুকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যান। সেই লোকটি মনে করিয়ে দিতে সাহায্য করবে চিকিৎসককে আপনি কী বলবেন।
৪. সঠিক তথ্য দিই না
অনেকেই চিকিৎসকের কাছে জীবনযাপনের কিছু বিষয় লুকিয়ে রাখেন বা সঠিক তথ্য দেন না। যেমন : মদ্যপান বা ধূমাপনের বিষয়ে কিছু বলেন না। পাশাপাশি অনেক রোগের লক্ষণও কখনো কখনো এড়িয়ে যান। যেটা একেবারেই ঠিক নয়। এটি পরবর্তীকালে সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসককে আপনার সঠিক অবস্থাটিই বলুন।
৫. স্পর্শকাতর তথ্য এড়িয়ে যাই
অনেকেই চিকিৎসকের কাছে ব্যক্তিগত বিষয় বলতে অস্বস্তিবোধ করেন। বিশেষত আবেগজনিত সমস্যা, যৌন সমস্যা, স্মৃতির সমস্যা ইত্যাদি। যদি আপনি বিষয়গুলো জানান তবে চিকিৎসকের চিকিৎসা করতে সুবিধা হয়। কেননা অনেক রোগই রয়েছে যেগুলো মানসিক চাপের কারণে হয়। তাই আপনি যে বিষয়টির সঙ্গে লড়াই করছেন সেটি চিকিৎসককে খুলে বলুন।
৬. প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি না
আমরা হয়তো সাক্ষাতের জন্য সঠিক সময় নিলাম বা কী বলব তার তালিকাও তৈরি করলাম। তবে চিকিৎসককে দেখানোর সময় তাঁকে আর কোনো প্রশ্ন করি না। অনেক চিকিৎসকই রয়েছেন যে হয়তো আপনার কী রোগ হয়েছে বা কীভাবে রোগটিকে প্রতিরোধের মধ্যে রাখবেন বিষয়গুলোও স্পষ্ট করে বলেন না। তাই নিজে থেকেই চিকিৎসককে প্রশ্ন করুন। রোগটি সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে চান। আর যেটি বুঝতে পারছেন না সেই বিষয়েও কথা বলুন।
৭. রোগটি সম্বন্ধে জানুন
এখন তো তথ্য পাওয়া অনেক সহজ। তাই চিকিৎসককে দেখিয়েই বিষয়টি শেষ করবেন না। বাড়ি ফিরে বিষয়টি সম্বন্ধে আরো জানুন। ইন্টারনেটে সার্চ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে পড়ুন।
৮. দ্বিতীয় কারো মতামত নিন
চিকিৎসকের ওপর আস্থা রাখা দরকার। বারবার চিকিৎসক পাল্টানোও ঠিক নয়। তবে কোনো জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলে অবশ্যই দ্বিতীয় আরেকটি মতামত নেওয়া প্রয়োজন। আরেকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। তার কাছ থেকেও পরামর্শ নিন। বিশেষ করে জটিল কোনো রোগের ক্ষেত্রে বা জটিল কোনো সার্জারি করার ক্ষেত্রে পরামর্শ করুন।
৯. চিকিৎসকের পরামর্শ না মানা
অনেকে চিকিৎসককে দেখিয়েই থেমে যান। চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা ঠিকমতো করান না বা ওষুধগুলো ঠিকমতো খান না। যেটা একদমই ঠিক নয়। এই অভ্যাসগুলোও বদলানো জরুরি।