পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিয়ে যত ভুল

অজ্ঞতার কারণে অনেকেই সন্তান না হওয়ার জন্য নারীকেই বেশি দোষারোপ করে থাকেন। সত্য হলো, পুরুষদের বন্ধ্যত্বের কারণেও অনেক সময় সন্তানধারণে সমস্যা হয়। তবে পুরুষদের বন্ধ্যত্ব নিয়ে কিছু ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত রয়েছে। এসব ভুল ধারণার কারণে সঠিক চিকিৎসা থেকে দূরে থাকেন পুরুষরা। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে পুরুষদের বন্ধ্যত্বের ভুল ধারণাগুলোর কথা।
১. ভুল ধারণা : বন্ধ্যত্ব কেবল নারীদের সমস্যা, এটি ভাবা সবচেয়ে বড় ভুল।
সঠিক : ১০০টি ঘটনার মধ্যে ৪০ ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় বন্ধ্যত্বের সমস্যাটি পুরুষের থাকে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষরা কখনো কখনো একেবারই বীর্য উৎপাদন করতে পারছেন না।
২. ভুল ধারণা : মানসিক চাপের কারণে বন্ধ্যত্ব হয়।
সঠিক : মানসিক চাপ যৌন মিলনের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। তবে বীর্যের গুণগতমান খারাপ করে না। যদি যৌন মিলনে কোনো অসুবিধা না থাকে, তবুও সন্তান না হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩. ভুল : পুরুষদের জননকোষ ঠান্ডা থাকলে ভালো বীর্য উৎপন্ন হয়।
সঠিক : এই ধারণাটি একদম সঠিক নয়। বরফের মতো ঠান্ডা জননকোষ কেবল ক্ষতিকরই নয়, অকার্যকরও বটে।
৪. ভুল : কেবল বয়স্ক পুরুষদের বন্ধ্যত্বের সমস্যা থাকে।
সঠিক : অনেক তরুণ পুরুষদের ক্ষেত্রেও শুক্রাণুর গুণগত মান খারাপ থাকে। এমনকি ২০ বছর থেকে এই সমস্যা হতে পারে।
৫. ভুল : ধূমপান এবং মদ্যপান পুরুষের বন্ধ্যত্বের বড় কারণ।
সঠিক : কথাটা কিছুটা সঠিক। ধূমপান এবং মদ্যপান কম করা শুক্রাণুর জন্য উপকারী।
৬. ভুল : পুষ্টি সংযোজন বা খাবারদাবার শুক্রাণুর গুণগত মান ভালো করে না।
সঠিক : অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিংক, সেলেনিয়ামসমৃদ্ধ খাবার শুক্রাণুর গুণগত মান ভালো করে।
৭. ভুল : মোবাইল ফোন পকেটে রাখার কারণে নিঃসরিত ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক তরঙ্গ শুক্রাণুর ক্ষতি করে।
সঠিক : বিষয়টি প্রশ্নাতীতভাবে এখনো প্রমাণিত হয়নি। এটি প্রমাণের জন্য আরো বড় গবেষণা দরকার।
৮. ভুল : আপনার যদি আগে সন্তান থাকে তবে পরবর্তীকালে বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগবেন না।
সঠিক : এটি সঠিক নয়। পুরুষ এবং নারী উভয়ের ক্ষেত্রে একটি সন্তান থাকার পর পরবর্তী সময়ে সন্তান হতে সমস্যা হতে পারে।
৯. ভুল : বাড়তি ওজন পুরুষদের বন্ধ্যত্বে কোনো ভূমিকা রাখে না।
সঠিক : যাদের উচ্চতার তুলনায় ওজন বেশি থাকে অর্থাৎ যারা ওজনাধিক্য তাদের বন্ধ্যত্বের সমস্যা হয়। তাই যেসব পুরুষের ওজন বেশি এবং সন্তান হতে সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
১০. ভুল : অতিরিক্ত সাইকেল চালনা শুক্রাণুর গুণগত মান ভালো করে।
সঠিক : এটা ঠিক নয়। সাইকেল চালানো শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়ায় না। সাইকেল শুক্রাণুর সংখ্যা বাড়াতে কোনো কাজ করে না।
১১. ভুল : বাইকচালকদের সব সময় তাদের সিটের ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত।
সঠিক : বাজে সিট বসতে অসুবিধা করে, তবে শুক্রাণু তৈরিতে কোনো সমস্যা তৈরি করে না।
১২. ভুল : প্রতিদিন যৌনমিলন উর্বরতা বাড়ায়।
সঠিক : কথাটি সঠিক নয়। বরং এটি সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। নারীর ডিম্বাণু মাত্র ২৪ ঘণ্টা সক্রিয় থাকে। নারীর উর্বরকালে পুরুষের একদিন পরপর টানা এক সপ্তাহ মিলিত হতে হয়। এতে বীর্যের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকে।