চিনি খেলে লিভারের কী ক্ষতি হয়?
মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার। লিভারকে বলা হয় কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি। কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো লিভারের ক্ষতি করতে পারে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডি জানিয়েছে এই বিষয়গুলোর কথা। গ্যালারিতে ক্লিক করে জেনে নিন এগুলোর বিষয়ে-
১. চিনি
বেশি চিনি কেবল আপনার স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর নয়, এটি শরীরের চর্বি বাড়িয়ে দেয়। বেশি চিনি খাওয়া লিভারের রোগ তৈরি করতে পারে। চিনির গ্লুকোজ শরীর শোষণ করে নেয়। পরিশোধিত চিনিতে ফ্রুকটোজ বেশি পরিমাণে থাকে। ফ্রুকটোজকে একমাত্র পরিশোধিত করে লিভার। লিভারে গিয়ে এই ফ্রুকটোজ চর্বিতে পরিণত হয়। এতে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কিছু গবেষণায় বলা হয়, মদ্যপানের মতো চিনিও লিভারের ক্ষতি করে; এমনকি ওজন বেশি না থাকলেও।
২. এমএসজি (মোনোসোডিয়াম গ্লুটেমেট)
প্রক্রিয়াজাত এবং প্যাকেটজাত খাবারে সাধারণত গন্ধ বাড়াতে এমএসজি (মোনোসোডিয়াম গ্লুটেমেট) ব্যবহার করা হয়। গবেষণায় বলা হয়, প্রাণীদের ক্ষেত্রে এই রাসায়নিক পদার্থ লিভারকে ফ্যাটি করে তোলে এবং প্রদাহ তৈরি করে। এটি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং লিভার ক্যানসার তৈরি করতে পারে। তবে মানুষের ক্ষেত্রে এর প্রভাব কতটা বেশি এ বিষয়ে গবেষণা করে দেখা হচ্ছে।
৩. হারবাল সাপ্লিমেন্ট
কেবল লেবেলের গায়ে ‘প্রাকৃতিক’ লেখা থাকলেই জিনিসটি নিরাপদ হয়ে যাবে, বিষয়টি ঠিক নয়। কিছু হারবাল সাপ্লিমেন্ট রয়েছে যেগুলো লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই এধরনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. বাড়তি ওজন
আপনি যদি বাড়তি ওজনের হন তবে লিভারেও চর্বি জমা শুরু করে। তাদের লিভারের রোগ এনএএফএলডি হতে পারে। মাঝ বয়সী, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, বেশি ওজনের লোকেদের এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। এই রোগের কোনো সমাধান নেই। তবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম কখনো কখনো এই রোগকে কমাতে সাহায্য করে।
৫. বেশি ভিটামিন এ
ডিম, দুধ, তাজা শাকসবজিতে (বিশেষত লাল, হলুদ এবং কমলা রঙের শাকসবজি) ভিটামিন এ রয়েছে। এ ছাড়া ভিটামিন এ এর সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায়। ভিটামিন এ দৃষ্টি শক্তি ভালো করতে, পেশি শক্তিশালী করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বেশিমাত্রায় ভিটামিন এ গ্রহণ লিভারকে বিষাক্ত করে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দিনে ১০ হাজার আইইউর বেশি ভিটামনি এ গ্রহণ করা ঠিক নয়।
৬. ট্যাটু
অনেকেই শরীরে বিভিন্ন ধরনের ট্যাটু তৈরি করেন। একজনের ব্যবহৃত যন্ত্র আরেকজনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হলে, এটি থেকে শরীরে হেপাটাইটিস সি ভাইরাসের সংক্রমণ করতে পারে। এটি লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
৭. অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ
কিছু কিছু অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই বিষণ্ণতা কমানোর ওষুধ সেবন করতে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৮. ট্রান্স ফ্যাট
ট্রান্স ফ্যাট হলো মানুষের তৈরি চর্বি। এটি প্যাকেটজাত এবং বেক করা খাবারে পাওয়া যায়। এই ধরনের খাবার কেবল ওজনই বাড়ায় না, এটি লিভারের বিভিন্ন ধরনের অসুখ তৈরি করে।
৯. কোমল পানীয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোমল পানীয়তে থাকা কৃত্রিম সুইটনার লিভারের ক্ষতি করতে পারে। কোমলপানীয় ওজন এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।