বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ
আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। মূলত এটি পশ্চিমা সংস্কৃতির হলেও কয়েক বছর ধরে পালন করা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশেও এই দিনটি বেশ ঘটা করেই উদযাপন করা হয়। মনের ভিতরে লুকানো ভালোবাসার কথা বলে দেয় অনেকেই এই ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে। সকাল থেকেই দেখা যায় তরুণ-তরুনীরা ফুলের দোকানে ভিড় জমায়। এই দিনে বাঙালি মেয়েরা লাল শাড়ি পরে তাদের ভালোবাসার মানুষটির সাথে সময় কাটায়। পার্কে, সিনেমা হলে, রেষ্টুরেন্টগুলোতে মানুষের প্রচুর ভিড় থাকে।
ভালোবাসা দিবস বলতে অনেকেই বুঝে নেয় যে, এটি বুঝি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকা বা স্বামী-স্ত্রীদের জন্যই। এটি একটি ভুল ধারণা। এদিনে আমরা আমাদের মা-বাবা, ভাইবোন, প্রিয় সন্তান এমনকি বন্ধুদের সাথেও উদযাপন করতে পারি। আমরা যাকে ভালোবাসি তাকে নিয়েই দিনটি কাটাতে পারি। একটি গোলাপ কিনে আজ আপনি আপনার মাকেও জানিয়ে দিতে পারেন যে আপনি আপনার মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ ।
ইতিহাসবিদদের মতে, দুটি প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে এ উৎসবের সূত্রপাত। এক খ্রিস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেনটাইনের নামানুসারে দিনটির নাম Homeইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব‘ভ্যালেন্টাইনস-ডে’ এর ইতিবৃত্ত
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব
‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ করা হয়। ২৭০ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি খ্রিস্টান বিরোধী রোমান সম্রাট গথিকাস আহত সেনাদের চিকিৎসার অপরাধে সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। মৃত্যুর আগে ফাদার ভ্যালেনটাইন তার আদরের একমাত্র মেয়েকে একটি ছোট্ট চিঠি লেখেন, যেখানে তিনি নাম সই করেছিলেন `ফ্রম ইওর ভ্যালেনটাইন`। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মেয়ে এবং তার প্রেমিক মিলে পরের বছর থেকে বাবার মৃত্যুর দিনটিকে ভ্যালেনটাইনস ডে হিসেবে পালন করা শুরু করেন। যুদ্ধে আহত মানুষকে সেবার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সেন্ট ভ্যালেনটাইনকে ভালোবেসে দিনটি বিশেষভাবে পালন করার রীতি ক্রমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ভ্যালেনটাইনস ডে আরও সার্বজনীন হয়ে ওঠে । দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পাওয়ার পেছনে রয়েছে আরও একটি কারণ। সেন্ট ভ্যালেনটাইনের মৃত্যুর আগে প্রতি বছর রোমানরা ১৪ ফেব্রুয়ারি পালন করত ‘জুনো’ উৎসব। রোমান পুরানের বিয়ে ও সন্তানের দেবী জুনোর নামানুসারে এর নামকরণ। এ দিন অবিবিবাহিত তরুণরা কাগজে নাম লিখে লটারির মাধ্যমে তার নাচের সঙ্গীকে বেছে নিত। ৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমানরা যখন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হয় তখন ‘জুনো’ উৎসব আর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আত্মত্যাগের দিনটিকে একই সূত্রে গেঁথে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ হিসেবে উদযাপন শুরু হয়। কালক্রমে এটি সমগ্র ইউরোপ এবং ইউরোপ থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।