গর্ভপাতের অধিকার : ফাঁস হওয়া গোপন নথি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তোলপাড়
যুক্তরাষ্ট্রের লাখো নারী হারাতে পারেন গর্ভপাতের অধিকার। সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথি থেকে এমনটি জানা যাচ্ছে। রাজনীতিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এ নথি প্রকাশ করেছে।
নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত দেশব্যাপী গর্ভপাতকে বৈধতা দেওয়া আইনি সিদ্ধান্ত ‘রো ভারসেস ওয়েড’ উলটে দেওয়ার পক্ষে রয়েছে।
১৯৭৩ সালের ওই রায় সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক অঙ্গরাজ্যেই গর্ভপাত নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা জুনের শেষে কিংবা জুলাইয়ের প্রথম দিকে এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করতে পারেন।
ফাঁস হওয়া ওই গোপন খসড়া নথির পরিপ্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সিদ্ধান্তটি যদি কার্যকর হয়, তাহলে অন্যান্য স্বাধীনতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সিএনএন জানায়, আইনি সিদ্ধান্তটি বাতিল হতে পারে—এমন খবরে সোমবার রাতেই দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। গর্ভপাতের অধিকারের এ আইনি সিদ্ধান্ত বাতিল হলে যুক্তরাষ্ট্রে কয়েক দশকের রক্ষণশীল আন্দোলন বড় ধরনের জয় পাবে।
এরই মধ্যে ঘটনাটি নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। নেতৃস্থানীয় উদার ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসা-সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষ এবং ডেমোক্র্যাট নেতাদের এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ডাক এসেছে। সুপ্রিম কোর্ট ভবনের বাইরে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভও শুরু হয়।
পলিটিকো জানিয়েছে, তাদের হাতে আসা সেই গোপন নথির খসড়া লিখেছেন রক্ষণশীল বিচারপতি স্যামুয়েল আলিটো। আদালতের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতির মতামত এ খসড়ায় প্রতিফলিত হয়েছে। এতে ১৯৭৩ সালের ‘রো বনাম ওয়েড’-এর সমালোচনা করে বলা হয়েছে, গর্ভপাতের অধিকার নিশ্চিত করে দেওয়া ওই রায় ভুলভাবে নেওয়া সিদ্ধান্ত।
ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে এ খসড়া বিচারপতিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। তবে, জুন কিংবা জুলাইয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রায় প্রকাশের আগে ভোট ও ভাষায় পরিবর্তন আনা হতে পারে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিরপেক্ষ সূত্রে ফাঁস হওয়া খসড়ার সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্যও করতে রাজি হননি। তবে, সামনের দিনগুলোতে হাইকোর্ট এ ধরনের নিলে এটি মার্কিনিদের জীবন ও আইনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে।
সোমবার রাতে খসড়া নথি প্রকাশ হওয়ার পর ডেমোক্র্যাটদের মধ্যেও শোরগোল পড়ে গেছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে আদালত ভবনের বাইরে বিক্ষোভ করেছে গর্ভপাতপন্থি এবং গর্ভপাতবিরোধীরাও।