প্রবীণদের ঈদের খাবার যেমন হবে
ঈদ মানে খুশি আর হাসির পাশাপাশি খাবারের ভূরিভোজ। তবে অতিভোজন ও অস্বাস্থ্যকর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ কিন্তু বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে ঈদের খুশিকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই ঈদের দিনগুলোতে আপনার বাসার প্রবীণ লোকটির খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন।
প্রবীণদের খাদ্য পরিপাক, হজম, বিপাক কিছুটা ধীরগতির হয়। ঈদের খুশিতে অতিভোজন ডেকে আনতে পারে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা। তাই প্রবীণদের ক্ষেত্রে খাবার নির্বাচনে সতর্ক হোন।
ঈদের খাবারে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
১. প্রবীণদের যেহেতু দাঁত নড়বড়ে থাকে, তাই তাঁদের শক্ত ও কম সেদ্ধ খাবার দেবেন না। আপনার বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তিটির ক্রনিক কিডনি রোগ থাকলে প্রোটিনজাতীয় খাবার কম দেবেন। কারণ, অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট করে।
২. প্রবীণ ব্যক্তির ক্রনিক লিভারের রোগ থাকলে মাংসসহ প্রোটিনজাতীয় খাবার কম খেতে দিন। কারণ, বেশি প্রোটিন খেলে অজ্ঞান হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৩. প্রবীণ লোকটির খাদ্য পরিপাকে, হজমে, বিপাকে সমস্যা থাকতে পারে। তাই বেশি তৈলাক্ত পোলাও, বিরিয়ানি খেতে সাবধান হোন। এতে গ্যাস, বুকজ্বলা, এসিডিটির সমস্যা বাড়বে।
৪. প্রবীণদের ব্যথা নিত্যসঙ্গী। তাই ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি-জাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়ান। এতে হাড় ভালো থাকবে।
৫. প্রবীণদের খাদ্য পরিপাকতন্ত্রের ক্ষমতা কমে যাওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল খেতে দিন। পাশাপাশি পরিমাণমতো তরল খাবার খাওয়ান।
৬. অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার ডায়াবেটিস বাড়াতে পারে। কাজেই সাবধান।
৭. অতিরিক্ত লবণ ও চর্বিজাতীয় খাবার হার্টের সমস্যা ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই কম লবণ ও কম চর্বিজাতীয় খাবার খেতে দিন।
৮. বাজারের কোমল পানিতে অস্বাস্থ্যকর রং, চিনিসহ বিভিন্ন উপাদান থাকে। তাই এগুলো খেতে না দিয়ে পরিমাণমতো বিশুদ্ধ পানি ও তরল খাবার খাওয়াতে হবে।
৯. প্রবীণদের জিহ্বার টেস্ট বাড কমে যাওয়ায় খাবারে রুচি কমে যায়। তাই রুচি বাড়াতে খাবারের সঙ্গে সালাদ, যেমন—টমেটো, শসা, লেবু, কাঁচামরিচ, আচার দিতে পারেন।
১০. এই ঈদে প্রবীণদের খাদ্যতালিকায় টক দই রাখুন। এটি খাদ্য হজমে সহায়তা করবে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।