অ্যানেসথেশিয়া কী?
অস্ত্রোপচারের আগে অজ্ঞান করাকে সাধারণত অ্যানেসথেশিয়া বলা হয়। অ্যানেসথেশিয়া বিভিন্ন রকম রয়েছে। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৯৩৪তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. শাহেরা খাতুন বেলা।
বর্তমানে তিনি ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজে এনেসথেসিওলজি বিভাগে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : অ্যানেসথেশিয়া বলতে আমরা কী বুঝি? কী কী ধরনের অ্যানেসথেশিয়া আপনারা কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন?
উত্তর : অ্যানেসথেশিয়া মূলত যেকোনো সার্জারি করার জন্য দরকার হয়। সার্জারি ছাড়াও আরো কিছু কিছু বিশেষ জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। ধরুন, বিল্ডিং ভেঙ্গে মাথার ওপর পড়ে গেছে রোগীকে টেনে বের করতে হবে। ওই সব ক্ষেত্রে কিছু কিছু ধরনের অ্যানেসথেশিয়া ব্যবহার করা হয়। তবে সাধারণ অর্থে অ্যানেসথেশিয়া মানে হলো রোগীকে অস্ত্রোপচার করার আগে অজ্ঞান করা। রোগী তো কখনো কখনো একটি সুই দিয়ে ফুটো করতে দেয় না। এরপর কেটে অস্ত্রোপচার করা তো অজ্ঞান করা ছাড়া সম্ভবই নয়। যতক্ষণ অস্ত্রোপচার হবে রোগী ব্যথা পাবে না, টের পাবে না। যখনই অস্ত্রোপচার হবে রোগীকে ব্যথামুক্তভাবে, একদম ঠিক অজ্ঞান হওয়ার আগের মানসিক অবস্থায় আমরা ফিরিয়ে আনি। এটি হলো জেনারেল অ্যানেসথেশিয়ার ব্যাপার।
তবে জেনারেল অ্যানেসথেশিয়া ছাড়াও কিছু লোকাল অ্যানেসথেশিয়া হয়। যেমন আজকাল খুব পরিচিত স্পাইনাল অ্যানেসথেশিয়া। এটি পিঠের একটি ব্লক। পিঠে অংশ থেকে নাভির নিচ পর্যন্ত অবশ করে দেওয়া হয়। নাভি থেকে নিচের অংশে যাবতীয় অস্ত্রোপচার সেটি দিয়ে করা হয়। এ ছাড়া অন্যান্য অ্যানেসথেশিয়া তো আছেই। এ ছাড়া অ্যানালজেশিয়া করা হয়। মানুষের তো ব্যথা নিয়ে ভয়। সেই ব্যথাটা থাকবে না। জেনারেল অ্যানেসথেশিয়া ছাড়া বাকি সব অ্যানেসথেশিয়াতে রোগী সম্পূর্ণভাবে জেগে থাকে। সে ইচ্ছে করলে ডাক্তারের সঙ্গে গল্পও করতে পারে। যদি ঘুমাতে চায় তাকে ঘুম পারিয়েও দিতে পারি। বিশেষ জায়গাটি অবশ করে নেওয়া হয়।
রোগীর কিন্তু অস্ত্রোপচারের ভয় নেই। যত ভয় ব্যথা নিয়ে। আর পুরো অজ্ঞান করলে তার জ্ঞানটা আদৌ ফিরবে কি না সেটি নিয়ে।