কাটা স্থান থেকে তীব্র বেগে রক্ত বের হলে করণীয়
সাধারণত ধমনি কাটা পড়লে ক্ষতস্থান থেকে তীব্র বেগে রক্ত বের হতে থাকে। এই রক্ত উজ্জ্বল লাল বর্ণের হয়। ধমনি কাটা পড়লে এবং রক্তক্ষরণ দ্রুত বন্ধ না করলে রক্তপাতের কারণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
এ ক্ষেত্রে আপনি যা করবেন
- ক্ষতস্থানটি হাত দিয়ে কিংবা কাপড় পেঁচিয়ে জোরে চেপে ধরুন। জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ খুঁজতে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করার দরকার নেই। কারণ, আপনাকে দ্রুত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে হবে।
- ব্যান্ডেজ ভিজতে থাকলে হাতের তালু ক্ষতস্থানটিতে সজোরে চেপে রাখুন। প্রয়োজনে আরেকটি প্যাড চাপিয়ে তারপর হাত দিয়ে চেপে ধরুন।
- কাপড়ের বা ব্যান্ডেজের নিচে রক্ত জমাটবদ্ধ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কারণ, রক্ত জমাট বাঁধলে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যাবে। যদি রক্ত জমাট না বাঁধে এবং প্যাড ভিজতে থাকে, তাহলে প্যাডটি সরাবেন না বা ব্যান্ডেজ খুলবেন না। স্থানটিকে আরো পুরু কাপড় দিয়ে জড়ান এবং হাতের চাপ অব্যাহত রাখুন। ব্যান্ডেজ করার সময় খেয়াল রাখবেন, তা যেন খুব আঁটসাঁট না হয়। কারণ, বেশি আঁটসাঁট হলে ওই স্থানে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হবে। তবে তীব্র রক্তপাত বন্ধ করতে টাইট ব্যান্ডেজের কখনো কখনো প্রয়োজন হয়।
- ক্ষতস্থানটি সর্বদা উঁচু করে রাখতে হবে এবং সেটা যেন হৃৎপিণ্ড বরাবর হয়।
- রক্তপাত বন্ধ করতে টুরনিকুয়েট ( সংকোচন বা কমপ্রেসিং ডিভাইস। এটি আর্টারি ও শিরার রক্ত সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে) ব্যবহার করবেন না। কারণ, তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। যদি রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হয় এবং কোনো কিছুতে তা বন্ধ করা যাচ্ছে না এমন হয়, সে ক্ষেত্রে টুরনিকুয়েট ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে টুরনিকুয়েট যেন দুই ইঞ্চি চওড়া হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- টুরনিকুয়েট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে তা ক্ষতস্থানের একটু ওপরে বাঁধতে হবে। ক্ষতস্থান বরাবর যেন টুরনিকুয়েট বাঁধা না হয়। যদি ক্ষতস্থানটি অস্থিসন্ধি এলাকায় কিংবা অস্থিসন্ধির নিচে হয়, তা হলে অস্থিসন্ধির একটু ওপরে টুরনিকুয়েট বাঁধতে হবে।
টুরনিকুয়েটটি শক্তভাবে দুবার পেঁচ দিয়ে বাঁধতে হবে এবং গিটটা অর্ধেক দিতে হবে। পরে একটি ছোট শক্ত কাঠি স্থাপন করে আরেকটি গিট দিতে হবে। রক্তপাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাঠিটা ঘুরিয়ে টুরনিকুয়েটের বাঁধনটা শক্ত করা যেতে পারে, তবে চেষ্টা করতে হবে টুরনিকুয়েট ব্যবহারের আগেই যাতে রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া যায়।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।