রিয়ালকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ম্যানসিটি
২০২১-২০২২ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে। এবার রিয়ালকে শেষ চার থেকে বিদায় করে একবছর আগের সেই হারের প্রতিশোধটা বেশ ভালোভাবেই নিয়েছে ম্যানসিটি। নিশ্চিত করেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মেগা ফাইনাল।
গতকাল বুধবার (১৮ মে) দিনগত রাতে ম্যানসিটির ঘরের মাঠ ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ম্যানসিটির জয় ৪-০ গোলে। সিটিজেনদের হয়ে জোড়া গোল করেন বার্নান্ডো সিলভা। একটি গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ, বাকিটি আত্মঘাতী। দুই লেগ মিলিয়ে রিয়ালকে ৫-১ অ্যাগ্রিগেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে সিটিজেনরা।
ঘরের মাঠে যে রিয়ালকে হারাতে পারে পেপ গার্দিওলার দল, সেই আভাস মিলেছিল আগেই। প্রথম লেগে রিয়ালের মাঠে ১-১ গোলে সমতায় থেকেই দ্বিতীয় লেগে খেলতে নামে সিটিজেনরা। ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরে্ ম্যানসিটি। ম্যাচের নবম মিনিটে দারুন সুযোগ পেয়েছিল ম্যানসিটি। কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বলে আর্লি হলান্ডের দুর্দান্ত ক্রসে রদ্রির শট বারের পাশ দিয়ে চলে যায়।
এরপর ম্যাচের ১৩তম মিনিটে জ্যাক গ্রিলিশের বাড়ানো বলে পেনাল্টি এরিয়াতে হলান্ডের জোরালো হেড দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কর্তোয়া। গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। চালাতে থাকে একের পর এক জোড়ালো আক্রমণ। যার ফল পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ম্যাচের ২৩তম মিনিটে ডি ব্রুইনের মাপা পাস খুঁজে নেয় বার্নান্ডো সিলভাকে। দৌড়ে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জালে জড়াতে ভুল করেননি তিনি। তার গোলেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
গোল হজম করে আক্রমণের ধার বাড়ায় রিয়াল। ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের করা কর্নারে টনি ক্রুসের দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন ম্যানসিটির গোলরক্ষক এডারসন। সেযাত্রায় গোল বঞ্চিত হয় রিয়াল। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ফের ব্যবধান বাড়ায় সিটিজেনরা। এবারও সেই সিলভার গোলেই এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। গ্রিলিসের বাড়ানো বলে ইকাই গুন্দোয়ানের শট ঠেকিয়ে দেন কর্তোয়া। ফিরতি শটে জালের নিশানা খুঁজে নেয় সিলভা। তার এই গোলে ব্যবধান ২-০ করে সিটিজেনরা। এরপর আর তেমন কোন আক্রমণ না হওয়ায় ২-০ গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় ম্যানসিটি।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডেভিড আলাবার ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচান এডারসন। ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে গুন্দোয়ানের ক্রসে হলান্ডের শটে বল কর্তোয়ার পায়ে লেগে বার ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। নাহয় ব্যবধান ৩-০ করতে পারত ম্যানসিটি।
তবে হতাশ না হয়ে আক্রমণ চালিয়ে যেতে থাকে সিটিজেনরা। ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে মিলিতাওয়ের আত্মঘাতী গোলে ফের একবার এগিয়ে যায় ম্যানসিটি। ডি ব্রুইনের বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালে জড়িয়ে ফেলেন মিলিতাও। এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয়ে যায় স্বাগতিকদের। এরপর ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ। বাকি সময়ে আর কোন গোল না হওয়ায় ৪-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটিজেনরা।
এই জয়ে শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালেই যায়নি ম্যানসিটি। বাড়িয়েছে ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনাও। আগামী ১০ জুন ফাইনালে ইন্টার মিলানের মুখোমুখি পেপ গার্দিওলার দল।