এমবাপ্পে জাদুতে বার্সাকে কাঁদিয়ে সেমিতে পিএসজি
চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসি, নেইমার ও সুয়ারেজদের নিয়ে সাত বছর আগে পিএসজির বিপক্ষে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেছিল বার্সেলোনা। শেষ ষোলোর দ্বিতীয় লেগে ৬-১ গোলে সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিল ফরাসি ক্লাবটি। ১০ জনের বার্সাকে কাঁদিয়ে নিশ্চিত করল চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) অলিম্পিক লুইস কোম্পানিস স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে পিএসজির জয় ৪-১ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে একটা পর্যায়ে ৪-২ গোলে পিছিয়ে পড়া পিএসজি শেষ পর্যন্ত ৬-৪ গোলের অগ্রগামিতায় পৌঁছে গেল শেষ চারে।
বিদায় নিলেও ম্যাচের শুরুটা অবশ্য দারুণ করেছিল বার্সা। ম্যাচের প্রায় আধঘণ্টা বল দখলে এগিয়ে ছিল কাতালানরা। শুরু থেকে আক্রমণে এগিয়ে থাকা বার্সা ম্যাচের ১২তম মিনিটেই গোলের দেখা পেয়ে যায়। ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনহার গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় জাভির দল।
অবশ্য বার্সার সেই আনন্দ খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। কেননা ম্যাচের ২৯তম মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে বিপাকে পড়ে বার্সা। পিএসজির ব্র্যাডলি বারকোলাকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন রোনাল্ড আরাউহোকে। ১০ জনের দল নিয়ে বাকি সময়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় বার্সাকে।
এরপর ম্যাচের ৪০তম মিনিটে সমতা ফেরান উসমান দেম্বেলে। বাঁ দিক থেকে বারকোলার বাড়ানো বলে দারুণ শটে বল জালে জড়ান এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। ১-১ সমতা নিয়েই বিরতিতে যায় দুদল। বিরতি থেকে ফিরেই ফের বার্সাকে ধাক্কা দেয় পিএসজি। ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে আশরাফ হাকিমির বাড়ানো বলে ভিতিনিয়ার গোলে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি।
এদিকে ম্যাচে একের পর এক কার্ড দেখানোয় রেফারিকে নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বার্সা কোচ জাভি। এক পর্যায়ে চতুর্থ অফিশিয়ালের সামনেই একটি বিজ্ঞাপনী বোর্ডে লাথি মেরে বসেন তিনি। এ ঘটনায় জাভিকেও লাল কার্ড দেখিয়ে ডাগআউট থেকে তাড়িয়ে দেন কোভাকস। প্রতিবাদ জানাতে গেলে লাল কার্ড দেখতে হয় বার্সার গোলকিপার কোচ দে লা ফুয়েন্তেকেও।
এরপর ম্যাচের ৬১তম মিনিটে বিপদ আরও বাড়ে স্প্যানিশ ক্লাবটির। দেম্বেলেকে নিজেদের বক্সে ট্যাকল করে বসেন জোয়াও কানসেলো। যার সুবাদে পেনাল্টি পায় পিএসজি। সফল স্পট কিকে প্যারিসের ক্লাবটিকে ৩–১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন এমবাপ্পে। এই গোলের মাধ্যমে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা পাঁচ ম্যাচে স্প্যানিশ প্রতিপক্ষের মাঠে গোলের রেকর্ড গড়েন এমবাপ্পে।
৩-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বার্সা। ম্যাচের ৮৯ তম মিনিটে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেন এমবাপ্পে। এমবাপ্পে ও মার্কো আসেনসিওর প্রচেষ্টা বার্সা গোলকিপার স্টেগেন রুখে দিলেও ডিফেন্ডার বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন। বলটা আবারও আসে এমবাপ্পের পায়ে। এবার তিনি আর ভুল করেননি। নিজেদের জোড়া গোলের পাশাপাশি পিএসজিকে তোলেন চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে।