আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস ব্যবধানে হারাল বাংলাদেশ
জয়ের মঞ্চটা আগের দিনই তৈরি করে রেখেছিল বাংলাদেশ। তবে সকালের প্রতিরোধে সেই অপেক্ষা বাড়ল কিছুটা। প্রথম সেশন শেষ করে লাঞ্চও সেরে নিলো আয়ারল্যান্ড। তবে এরপর আর বেশি সময় টেকেনি আইরিশদের সেই প্রতিরোধ। লাঞ্চ থেকে ফিরেই ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে টাইগাররা।
আজ শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসেই ইনিংস ও ৪৭ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসেই আয়ারল্যান্ডকে ৩০১ রানের লিড দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই রান তাড়ায় নেমে ২৫৪ রান অলআউট হয়ে গিয়েছে আয়ারল্যান্ড।
দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশের অপেক্ষা দীর্ঘায়িত করছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। আগের দিন বিকেলে নামা এই ব্যাটার তুলে নেন হাফসেঞ্চুরিও। লাঞ্চ থেকে ফেরার পর দ্বিতীয় বলেই তাকে সাজঘরের পথ দেখান নাহিদ রানা। হাসান মুরাদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১০৬ বলে ৫২ রান করেন তিনি।
এরপর আগের ওভারেই আরেকপ্রান্ত আগলে রাখা জর্ডান নেইলকে ফেরান হাসান মুরাদ। সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৪৩ বলে ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
পরের ওভারে শেষ ব্যাটার হিসেবে ম্যাক কার্থিকে ফিরিয়ে আইরিশদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন তাইজুল ইসলাম। কার্থির ব্যাট স্পর্শ করে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় বাংলাদেশ।
৫ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল আয়ারল্যান্ড। সকালটা বেশ ভালোই কাটে আইরিশ। প্রতিরোধ গড়ে তুলেন ম্যাকব্রাইন আর হামফ্রিস। এদিন এই দুজন মিলে ৩০ রান তুলে ফেলার পর প্রথম উইকেটের সুবাস পায় বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের বলে সাদমান ইসলামকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন হামফ্রিস। ফেলার আগে করেন ১৮ বলে ১৬ রান।
আইরিশদের পরের প্রতিরোধ প্রাচীর যেনো আরও শক্তিশালী। রীতিমতো ধৈর্যের পরীক্ষা নেন বাংলাদেশের। অষ্টম উইকেট জুটিতে ম্যাকব্রাইন আর বলবার্নি মিলে খেলেন ১১৯ বল। তাদের জুটিতে আসে ৬৬ রান। অবশেষে সেই জুটি ভাঙেন হাসান মুরাদ। এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে ফেরান বলবার্নিকে। ৬৩ বলে ৩৮ রান করে বিদায় নেন তিনি। চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে ৩১ ওভার খেলে ২ উইকেট হারিয়ে ১১২ রান তুলে মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় আয়ারল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন হাসান মুরাদ। তিনটি উইকেট গেছে তাইজুল ইসলামের ঝুলিতে আর দুটি নাহিদ রানার।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভালো শুরুর পরও বাংলাদেশের বোলিংয়ের সামনে শেষটা ভালো করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। তাদের প্রথম ইনিংসে থেমেছিল ২৬৮ রানে।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমেও দুর্দান্ত শুরু করে বাংলাদেশ। টেস্টের প্রথমবার টপঅর্ডার চার ব্যাটারের মধ্যে সবাই হাফসেঞ্চুরির দেখা যায়। এর মধ্যে ওপেনার মাহমুদুল হাসান হয় খেলেন ক্যারিয়ারসেরা ১৭১ রানের ইনিংস। সেঞ্চুরি করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। এতে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড (প্রথম ইনিংস) : ৯২.২ ওভারে ২৮৬/১০
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস) : ১৪১ ওভারে ৫৪৭/৮ ডিক্লেয়ার
আয়ারল্যান্ড (দ্বিতীয় ইনিংস) : ৭০.২ ওভারে ২৫৪/১০ (স্টার্লিং ৪৩, কারমাইকেল ৫, টেক্টর ১৮, ক্যাম্ফার ৫, টাকার ৯, হামফ্রিস ১৬, অ্যান্ডি বলবার্নি ৩৮, ম্যাকব্রাইন ৫২, নেইল ৩৬, ম্যাককার্থি ২৪, ইয়াং ০*; হাসান মাহমুদ ৬-২-১৫-০, নাহিদ ৮-১-৪০-২, মিরাজ ১৯-৪-৪৮-০, হাসান মুরাদ ১৪-১-৬০-৪, তাইজুল ২৩.২-৩-৮৪-৩)
ফলাফল : বাংলাদেশ ইনিংস ও ৪৭ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : মাহমুদুল হাসান জয়
সিরিজ : দুই ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ০-১ ব্যবধানে এগিয়ে

স্পোর্টস ডেস্ক