বিশ্বের সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ বানাচ্ছে চীন
মহাবিশ্বে অন্য কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না জানার জন্য বিজ্ঞানীদের চেষ্টার অন্ত নেই। এবার এই প্রচেষ্টাকে আরো এক ধাপ এগিয়ে দেওয়ার জন্যই কি না, চীন বানাতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ। সংবাদ সংস্থা সিএনএনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই খবর।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র বানাচ্ছে এই টেলিস্কোপ। ৫০০ মিটার অ্যাপার্চারবিশিষ্ট এই স্ফেরিকাল টেলিস্কোপ মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্ববিষয়ক গবেষণাকে আরো এগিয়ে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে এর নির্মাণকাজ প্রায় শেষের পথে। চীনের গুইঝু প্রদেশে ২০১১ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। মহাবিশ্বের ১০ লক্ষাধিক তারা ও সৌরচক্র থেকে নির্গত রেডিও সিগন্যাল চিহ্নিত করতে সক্ষম।
চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, এই টেলিস্কোপের সম্পূর্ণ নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০১৬ সালে। টেলিস্কোপটি নাকি হাজার হাজার সৌরবর্ষের দূরত্ব থেকে আসা রেডিও সিগন্যালও ধরতে পারবে।
টেলিস্কোপের এই প্রজেক্টের প্রধান বিজ্ঞানী ন্যান রেনদং-এর ভাষ্যমতে, ‘টেলিস্কোপ অনেকটা সংবেদনশীল কানের মতো। অসংখ্য অর্থহীন শব্দ থেকে প্রয়োজনীয় শব্দটি নির্ণয় করতে সক্ষম হবে এটি।’
ফলে বলা যায়, নভোচারী ও বিজ্ঞানীরা এখন আগের থেকে সহজে মিল্কিওয়েসহ অন্যান্য গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।
গত বছর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা কেপলার-৪৫২ বি নামের একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছিল, যা কি না পৃথিবীর মতোই বায়ুমণ্ডলের অধিকারী। কিন্তু ওই গ্রহে প্রাণের নিশানা আছে কি না, তা নির্ণয় করার মতো শক্তিশালী কোনো ডিভাইস নাসার কাছে নেই। চীনের এই বিশালাকৃতির টেলিস্কোপ সচল হলে তখন আর এ জাতীয় সমস্যায় ভুগতে হবে না বিজ্ঞানীদের।
চীনা অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির প্রধান উ জিনপেং বলেন, ‘সৌরজগতের বাইরে কোনো বুদ্ধিমান প্রাণী আছে কি না, তা এখন বের করা সহজ হবে। এ ছাড়া মহাবিশ্বের শুরুটা কীভাবে হলো, সে বিষয়ক গবেষণাও এই টেলিস্কোপের সহায়তায় করা সহজ হবে।

অমর্ত্য গালিব চৌধুরী